হিজড়াদের জন্য আলাদা মাদ্রাসা চালু হচ্ছে

হিজড়া জনগোষ্ঠীর জন্য দেশে একটি আলাদা মাদ্রাসা ঢাকায় চালু করা হবে বলে ঘোষণা করা হয়েছে। হিজড়া জনগোষ্ঠীর জন্য দেশে এটি প্রথম একটি মাদ্রাসা। রাজধানী ঢাকার কামরাঙ্গীর চরের লোহার ব্রিজ এলাকায় নির্মিত এই মাদ্রাসাটির নাম রাখা হয়েছে ‘দাওয়াতুল কুরআন তৃতীয় লিঙ্গের মাদ্রাসা’।মাদ্রাসাটির শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ সচিব মোহাম্মদ আব্দুল আজিজ হুসাইনী বিবিসি বাংলাকে জানান,

শুক্রবার( ৬ নভেম্বর) এই মাদ্রাসা উদ্বোধনের কথা রয়েছে। তিনি আরো বলেন, উদ্বোধনের পর ঢাকার বিভিন্ন প্রান্তে থাকা দেড়শো’র বেশি হিজড়াকে এই মাদ্রাসায় ভর্তি করা হবে।আব্দুল আজিজ হুসাইনী বলেন, ‘ঢাকার যাত্রাবাড়ী, বাড্ডা, কামরাঙ্গীর চর, সিলেটি বাজার – এমন কয়েকটা এলাকায় আমাদের ২০-২৫ জন করে শিক্ষার্থী আছে, যাদের আমরা আলাদা করে পড়াতাম।

এই মাদ্রাসাটি উদ্বোধন করা হলে তাদের সবাইকে এখানে রেখে একসাথে পড়াতে পারবো।’একটি তিন তলা ভবনে ‘দাওয়াতুল কুরআন তৃতীয় লিঙ্গের মাদ্রাসা’ স্থাপন করা হয়েছে। এর প্রতিটি তলায় প্রায় ১২০০ বর্গফুট জায়গা রয়েছে। এখানেই সব শিক্ষার্থীদের থাকা-খাওয়া এবং পড়াশোনার ব্যবস্থা করা হবে বলে জানানো হয়েছে।

মাদ্রাসাটির মহাসচিব মোহাম্মদ আব্দুর রহমান আজাদ বিবিসি বাংলাকে জানান, এই শিক্ষার্থীদের পড়াতে ১০জন শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে।চলতি বছরের শুরু থেকেই এই মাদ্রাসা নির্মাণের কাজ শুরু করা হয়। দাওয়াতুল কুরআন তৃতীয় লিঙ্গের মাদ্রাসায় পড়ার ক্ষেত্রে কোন বয়স সীমা নির্ধারণ করে দেয়া হয়নি, অর্থাৎ হিজড়া জনগোষ্ঠীর যে কোনো বয়সের মানুষ এই মাদ্রাসায় ভর্তি হতে পারবেন।

এখানে পড়াশোনা করতে শিক্ষার্থীদের কোন খরচ দিতে হবে না। আবদুল আজিজ হুসাইনী জানান, মরহুম আহমদ ফেরদৌস বারী চৌধুরী ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে মাদ্রাসাটির যাবতীয় কার্যক্রম চলবে।মাদ্রাসা নির্মাণের সঙ্গে জড়িতরা জানাচ্ছেন, হিজড়া জনগোষ্ঠী বাংলাদেশের পরিবার ও সমাজে এরা নানাভাবে অবহেলিত, অনাকাঙ্ক্ষিত এবং অবাঞ্ছিত। তাই এই জনগোষ্ঠীকে স্বাভাবিক জীবনে ফেরানোর লক্ষ্যে এই মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।

এই মাদ্রাসায় মূলত কুরআন শিক্ষার পাশাপাশি কারিগরী শিক্ষাও দেয়া হবে বলে আয়োজকরা জানিয়েছেন। ফলে এখান থেকে পড়াশোনা শেষে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন কারিগরী পেশায় যুক্ত হতে পারবেন।এদিকে তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীর জন্য একেবারে একটি আলাদা মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠাকে স্বাগত জানিয়েছেন এই কমিউনিটির সদস্যরা। সরকারের সমাজসেবা অধিদপ্তরের জরিপ বলছে, বাংলাদেশে হিজড়ার সংখ্যা প্রায় ১০ হাজার। তবে বেসরকারি সংস্থাগুলোর মতে, এই সংখ্যা ৫০ হাজারের বেশি।