হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে নন্দীগ্রামে যে দল বিজয় হলেন

চরম নাটকীয়তা আর হাড্ডাহাড্ডি লড়াই শেষে পশ্চিমবঙ্গের নন্দীগ্রাম আসনে জয় পেলেন তৃণমূল কংগ্রেসপ্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।জয় নিশ্চিত হতেই কালীঘাটের বাড়ি থেকে হুইল চেয়ার ছেড়ে বেরিয়ে পড়েন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী। পায়ে হেঁটে তিনি ঢোকেন দলের রাজনৈতিক কার্যালয়ে।বিধান সভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের বিপুল জয় নিশ্চিত হলেও দলীয় প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জয় নিয়ে দিনভর ছিল শংকা। ভোট গণনা যত এগোয় ততই অনিশ্চয়তা তৈরি হয়।

গণনার ষোড়শ রাউন্ড শেষে নন্দীগ্রামে মমতার চেয়ে ছয় ভোটে এগিয়ে যান তার প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপির শুভেন্দু অধিকারী। তবে সবশেষ রাউন্ডে তার জয় নিশ্চিত হয়। ভোটের চূড়ান্ত ফলে ১২০১ ভোটে মমতার জয় নিশ্চিত হয়েছে।গত বছর ডিসেম্বরের মাঝামাঝি তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগ দেন শুভেন্দু। তারপর লাগাতার মমতা ও তার ভাইয়ের

ছেলে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে আক্রমণ চালিয়ে যান তিনি। সেই তুলনায় তৃণমূল অনেকটাই স্তিমিত ছিল। তবে অধিকারীদের সঙ্গে সম্পর্কের শেষ পেরেক পোতেন মমতাই। নন্দীগ্রামে দাঁড়িয়ে ঘোষণা করেন, সেখান থেকেই ভোটে লড়বেন তিনি।

তারপরই নন্দীগ্রামের লড়াইয়ে রাজনীতির যাবতীয় সমীকরণ উল্টে যায়। ১০ মাস আনুষ্ঠানিক ভাবে নন্দীগ্রামের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দেন মমতা। ওই দিনই নন্দীগ্রামে আক্রান্ত হন মমতা। পায়ে আঘাত পান। তা নিয়ে তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে ঝগড়া চরমে ওঠে।এর দু’দিন পর, ১২ মার্চ নন্দীগ্রাম থেকে বিজেপির হয়ে মনোনয়ন জমা

দেন শুভেন্দু। তারপর থেকে বিজেপির হেভিওয়েট নেতারা শুভেন্দুর হয়ে সেখানে সভা করে এসেছেন। সেই তুলনায় নন্দীগ্রামে তৃণমূলের সভা ছিল মমতাসর্বস্বই। তবে সেখানে জেতা নিয়ে শুরু থেকেই আত্মবিশ্বাসী ছিলেন মমতা।

এমনকি ১ এপ্রিল নন্দীগ্রামে যে দিন ভোটগ্রহণ, সেদিন সেখানে থাকলেও, শুভেন্দুর মতো সকাল থেকে বুথে বুথে ঘুরতে দেখা যায়নি তাঁকে। শুধু দুপুরে বয়াল এলাকায় ঝামেলার খবর পেয়ে প্রথম বাইরে বের হন মমতা। বিজেপি ভোট লুট করছে বলে তাকে জানান গ্রামবাসীরা।অভিযোগ খতিয়ে দেখতে দুই ঘণ্টা বুথের ভেতর বসেছিলেন মমতা। সেই সময় তাকে তাচ্ছিল্য করে শুভেন্দু বলেন, ‘খেলা তো হয়ে গিয়েছে। ৮০ শতাংশ ভোট পড়ে গিয়েছে। এখন আর কী করবেন।’ কিন্তু নন্দীগ্রামে ভোটের খেলায় মমতার কাছেই শেষমেশ গোল খেতে হল তাকে।