বিয়ের ফাঁদে প্রবাসীর সাড়ে ৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নিলেন নারী

রুমা আক্তার নামের এক নারী বিয়ের ফাঁদ পেতে এক প্রবাসীর কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। রুমা আক্তার সাতক্ষীরা জেলা সদরের চাঁদপুর গ্রামের জাহাঙ্গীরের মেয়ে। তিনি নিজেকে ওই প্রবাসীর স্ত্রী দাবি করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও মোবাইলে মানসিকভাবে নির্যাতন করছেন বলেও অভিযোগ প্রবাসীর।

প্রতারণার শিকার ওই ব্যক্তি হলেন হাসেম মিয়া ওরফে হাসান মিয়া। তিনি মির্জাপুর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের ফতেপুর গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে।এ ঘটনার পর গত ১০ অক্টোবর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন হাসেমের ভগ্নিপতি কাবেল উদ্দিন। ডায়েরি নম্বর ৪৫৭।জিডি ও হাসেমের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, দুই বছর আগে হাসেম চাকরি নিয়ে কাতার চলে যান। এর তিন বছর আগে হাসেম বিবাহ করেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ইমোতে তার সঙ্গে রুমার পরিচয় হয়। পরে মোবাইলে তাদের একাধিকবার কথা হয়। এরমধ্যে রুমা আক্তার এফিডেভিটের মাধ্যমে করা বিয়ের একটি কপি হাসেমের হোয়াটসঅ্যাপে পাঠান। এফিডেভিটে সাতক্ষীরা জজ কোর্টের আইনজীবী ও নোটারি পাবলিক এ টি এম আলী আকবর নামের একজনের নাম রয়েছে। বিয়ের তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে ৩ আগস্ট। দেনমোহর চার লাখ টাকা।

হাসেম কপি পেয়ে ভয় পেয়ে যান। রুমা নিজেকে স্ত্রী দাবি করে তার কাছে মোটা অংকের টাকা দাবি করেন। হাসেম দিতে অস্বীকার করলে মামলার ভয় দেখানো হয়। মামলার ভয়ে হাসেম বিভিন্নভাবে রুমার কাছে তিন লাখ ৫০ হাজার টাকা পাঠান।জিডিতে আরও উল্লেখ করা হয়, টাকা পেয়ে রুমা আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। তিনি বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখাতে থাকেন। হাসেম বিষয়টি তার ভগ্নিপতি কাবেল মিয়াকে জানান। রুমা যে আইনজীবীর নাম ব্যবহার করে হাসেমের কাছে এফিডেভিটের কপি পাঠিয়েছেন কাবেল কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে সাতক্ষীরার সেই আইনজীবীর কাছে যান। আইনজীবী এ টি এম আলী আকবর আলী তাহার রেজিস্টার খাতা ও ভলিউম বই তল্লাশি করেন। তবে তাদের বিয়ের কোনো এফিডেভিট পাননি।

রুমাকে প্রতারণার এ কাজে সাতক্ষীরার কবীর হোসেন, রনি আহমেদ ও ইউসুফ নামের তিনজন সহযোগিতা করেন বলে কাবেল উদ্দিন জানিয়েছেন। তাদের দেওয়া বিকাশ নম্বরে হাসেম কাতার থেকে টাকা পাঠান।সাতক্ষীরা এলাকার রনি নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে মোবাইলে কথা হলে জানান, তার স্ত্রীর বান্ধবী রুমা। কয়েক মাস আগে স্ত্রী তাকে বলেন, তোমার বিকাশে বান্ধবী রুমার কিছু টাকা আসবে। তার বিকাশ নম্বরে দুইবারে ১৭ হাজার টাকা আসে। ওই টাকা তার স্ত্রীর মাধ্যমে রুমাকে দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত রুমা আক্তারের নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।সাতক্ষীরা জজকোর্টের আইনজীবী এ টি এম আলী আকবর মোবাইলে জাগো নিউজকে বলেন, রুমা আক্তার ও হাসেমের বিয়ের কোনো এফিডেভিট আমি করিনি। রুমা আক্তার প্রতারণার সুযোগ নিয়ে আমার নাম ব্যবহার করে এটি করে থাকতে পারেন।জিডির তদন্তকারী কর্মকর্তা মির্জাপুর থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো. জিয়া বলেন, বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।