বিশ্রাম একটু বেশিই হয়ে গিয়েছিল; কেন বললেন মাহমুদুল্লাহ?

মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে গতকাল দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে স্বপ্নের ব্যাটিং করেছেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। হিমালয়সম চাপে থেকেও যেভাবে তিনি ৩ অঙ্কের জাদুকরী ইনিংস খেলেছেন, নিঃসন্দেহে শুধু বিশ্বকাপ নয়, ওয়ানডে ক্রিকেট ইতিহাসে সেরা কামব্যাকের গল্প! শুধু কামব্যাকের গল্প নয়, প্রতিকূল স্রোতে সাঁতার কেটে যেভাবে নিজের অবস্থান সংহত করেছেন, যেভাবে নামের প্রতি বিচার করেছেন, বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে এমন রেকর্ড নেই কারও। অদূর ভবিষ্যতে কেউ করতে পারবেন কি না, এ সংশয় থেকে যাচ্ছে।

জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ হার না মানা মানসিকতায় বিশ্বাসে ভরপুর এক চরিত্র। জাতীয় দল থেকে তাকে যখন ‘বিশ্রাম’-এর আড়ালে বাদ দেওয়া হলো তখন থেকেই চুপচাপ তিনি।

দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব গ্রহণের পর চন্ডিকা হাথুরুসিংহে নিজের প্রথম সিরিজে মাহমুদুল্লাহকে বাজিয়ে দেখেন। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ওয়ানডেতে তার রান ৩১, ৩২ ও ৮। আহামরি খারাপ না করলেও দ্বিতীয় সিরিজেই মাহমুদুল্লাহ ‘ড্রপ’! আনুষ্ঠানিকভাবে ‘ড্রপ’ বলার সুযোগও নেই। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম দুই ওয়ানডেতে বিশ্বকাপের প্রথম সেঞ্চুরিয়ানকে না রাখার কারণ হিসেবে নির্বাচকদের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্রামে পাঠানোর কথা বলা হয়েছিল। সেই বিশ্রাম এতোটোই লম্বা ছিল যে তাকে চারটি সিরিজে বাইরে থাকতে হয়। যার মধ্যে ছিল এশিয়া কাপও।

কিন্তু দলের ভরাডুতিতে তার দুয়ারেই আবার ফিরতে হয় টিম ম্যানেজমেন্টকে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজে ফিরে ৪৯ ও ২১ রানের দুটি ইনিংস খেলেন। তাতে খুলে যায় বিশ্বকাপের দরজা। যেখানে তার হাত ধরেই এলো চলতি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে প্রথম সেঞ্চুরি।

টেস্ট থেকে মাহমুদুল্লাহ অবসর নিয়েছেন সেঞ্চুরির পর। নিয়মিত ওয়ানডে চালিয়ে যাচ্ছেন। ক্যারিয়ারের সায়াহ্নে এসে চারটি সিরিজ বাইরে থাকা রীতিমতো কঠিন কাজ। নিজেও এমন বিশ্রাম প্রত্যাশা করেছিলেন কি না জানতে চাওয়া হয়েছিল। উত্তরে মাহমুদুল্লাহ সোজাসাপ্টা বলেছেন, ‘নাহ.. বিশ্রাম মনে হয় একটু বেশি হয়ে গিয়েছিল (হাসি)…এটা তো আমার কন্ট্রোলে কিছু নেই। তাদের সিদ্ধান্ত। দলের সিদ্ধান্ত। টিম ম্যানেজমেন্ট যেটা দলের জন্য ভালো মনে করেছে, সেটা করেছেন। আমার যে কাজটা সততা দিয়ে করতে পারি, দ্যাট ইজ গুড এনাফ ফর মি। দলের জন্যও। এটাই সব সময় চেষ্টা ছিল ও থাকবে।’

তবে মাহমুদুল্লাহ সহজেই ছাড় দেবেন না। তারও অভিযোগ আছে। আছে কথা বলার। নিজের অবস্থান জানানোর, প্রতিক্রিয়া দেখানোর। জানালেন, আদর্শ সময়ে মুখ খুলবেন, ‘আমি এখন ওই সব বিষয় নিয়ে কথা বলতে চাচ্ছি না যদিও আমার অনেক কিছু নিয়ে কথা বলার আছে। সম্ভবত এখন আদর্শ সময় নয় সেসব নিয়ে কথা বলার। আমি পরবর্তীতে আরও কিছু জানাব।’পরে যখন জানতে চাওয়া হয় উপেক্ষিত থাকার যন্ত্রণা থেকে প্রতিবাদ হিসেবে উদযাপন করেছিলেন কি না সেটাও উড়িয়ে দেন দলের মান রাখা এই ক্রিকেটার, ‘কোন প্রতিবাদ ছিলো না। একশো হয়েছে। উদযাপন বিশেষ কিছু না। যদি জিততে পারতাম তাহলে আরও বুনো উদযাপন করতাম। চেষ্টা করবো সামনের ম্যাচে আরও বেশি অবদান রাখার।’