ছেলেকে বাঁচাতে অটোরিকশাচালক বাবার আকুতি

চার বছর বয়স থেকে একদিনও পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ বাদ দেননি ফেরদৌস (৬)। অন্যান্য শিশুদের চেয়ে সে একটু আলাদা স্বভাবের। আজানের শব্দ শুনলেই ছুটে যায় মসজিদে। গত বছরে হার্টে সমস্যা দেখা দেয়ার পর ছেলেটি আর হাটঁতে পারে না। অসুস্থতার মাঝেও পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ছাড়েনি।কখনও মায়ের কোলে কখনোবা দাদির কোলে চড়ে মসজিদে গিয়ে নামাজ আদায় করেন। হঠাৎ করেই অসুস্থ হয়ে যায় ছেলেটি। পরীক্ষা-নিরীক্ষায় হার্টের ছিদ্র ধরা পড়ে শিশুটির। তার এমন রোগে হতাশ হয়ে পড়েন দরিদ্র অটোরিকশাচালক বাবা ও তার মা।

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী গ্রামের অটোরিকশাচালক মঞ্জরুল ইসলাম ও ফেরদৗসী দম্পতির একমাত্র সন্তান। ছেলের এমন অবস্থা দেখে হতাশায় পড়ছেন দরিদ্র অটোরিকশাচালক বাবা ও মা। মাত্র ৬ বছর বয়সের এই শিশুর অপারেশনের জন্য প্রয়োজন প্রায় ৪ লাখ টাকা।

দারিদ্র্যতার কারণে তার অপারেশন করাতে পাচ্ছেন না পরিবার। জায়গা জমি বলতে ভিটেমাটি মাত্র ২ শতক। অটোরিকশা চালিয়ে যা আয় হয় তা দিয়ে চলে সংসার। ছেলেকে বাঁচাতে পারবেন না- এমন চিন্তায় বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন বাবা মঞ্জরুল ইসলাম।এর আগে, রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক (কার্ডিওলজি) ডা. মো. হাসানুল ইসলামের মাধ্যমে চিকিৎসা নেয়ার পর তিনি ঢাকায় ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনে আবারও পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরামর্শ দেন।

ঢাকায় ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ সার্জন ডা. ইলিয়াস পাটোয়ারীকে দেখানোর পর পরীক্ষা-নিরীক্ষায় একটি হার্টে ছিদ্র ধরা পড়ে পাশাপাশি দুই ভেইন (রগ) চিকন হয়ে গেছে তাই দ্রুত অপারেশনের পরামর্শ দেন। টাকার অভাবে অপারেশন করতে না পেরে শিশু ফেরদৌসকে বাড়িতে নিয়ে আসেন।

অপারেশনসহ চিকিৎসা বাবদ খরচ হবে প্রায় ৪ লাখ টাকা। কিন্তু পরিবারের সেই টাকা জোগাড় করার মতো অবস্থা নেই। যা ছিল এতদিন চিকিৎসা করাতে শেষ হয়ে গেছে। কোনো উপায় না থাকায় একমাত্র ছেলে সন্তানকে বাঁচাতে সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা চেয়েছেন মঞ্জরুল ইসলাম।শিশু ফেরদৌসের দাদি মোহসেনা বেওয়া জানান, আজান শুনলেই তাকে কোলে উঠে মসজিদে নিতে হবে তা না হলে কান্নাকাটি শুরু করেন দেন। তাই কোনো উপায় না পেয়ে ফজর থেকে তাকে কোলে করে মসজিদে নিতে হয়।

মঞ্জরুল ইসলাম বলেন, এক বছর ধরে ছেলে চিকিৎসা করতে সব শেষ করে ফেলেছি। এখন পরীক্ষা-নিরীক্ষায় একটি হার্টে ছিদ্র ধরা পড়ে, অপারেশন করতে প্রায় ৪ লাখ টাকা প্রয়োজন। এত টাকা আমি কই পাব? তাই সমাজের মানুষে কাছে হাতজোড় করছি আমার ছেলেকে বাঁচান।

গড্ডিমারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল বলেন, সে অত্যন্ত দরিদ্র। অনেক কষ্টে সংসার চলে। তার ছেলের অপারেশন করতে প্রচুর টাকার প্রয়োজন তাই সকলেই কিছু করে অর্থ দিয়ে সাহায্য করুন। আমি ব্যক্তিগতভাবে নগদ অর্থের ব্যবস্থা করব।শিশু ফেরদৌসের অপারেশনের জন্য সহযোগিতা করতে পারেন (বিকাশ নম্বর) ০১৭৪২-১৬১০৩৬ ও যোগাযোগ ০১৭৪৪-৮১২৩৭৪ শিশুটির বাবা মঞ্জরুল ইসলাম।