৩০ বছর পর শুশা শহরে আজান দিল আজেরি সেনাবাহিনী

আর্মেনিয়ার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শহরে প্রায় ৩০ বছর পর আর্মেনিয়ার হাত থেকে নাগোরনো-কারাবাখের শুশা দখলমুক্ত করেছে আজারবাইজান। এরপর শহরটিতে বুধবার প্রথমবারের মতো আজান দেয় আজারবাইজান সেনাবাহিনী। তুর্কি সংবাদমাধ্যম ইয়েনি শাফাক জানিয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, শুশা শহরের ঐতিহাসিক ইউখারি গভহার আগা মসজিদে আজারবাইজানের এক সেনাবাহিনীর সদস্য আজান দিচ্ছেন। এরপর মসজিদ থেকে শহরের বেশ কিছু অঞ্চল দেখানো হয়।

১৯৯২ সালের ৮মে শুশা অধিগ্রহণ করে আর্মেনিয়ার বাহিনী। এই অঞ্চলটি আপার কারাবাখ এলাকার কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ শহর। যদিও এই অঞ্চলটি আন্তর্জাতিকভাবে আজারবাইজানের ভূখণ্ড হিসেবে স্বীকৃত। এর আগে ৮ নভেম্বর আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভে আর্মেনিয়ার হাত থেকে শুশা শহরটি দখলমুক্ত করা হয়েছে বলে ঘোষণা দেন। ওই সময় সামরিক পোষাক পরে জাতির উদ্দেশে দেয়া এক ভাষণে প্রেসিডেন্ট ইলহাম বলেন, ২৮ বছর পরে শুশায় আযান শোনা যাবে।

আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ার সীমান্তে ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে ব্যাপক সংঘর্ষ ও গোলাগুলি চলে আসছিল। রাশিয়ার মধ্যস্থতায় মাঝে দুই দেশ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হলেও কাজের কাজ তেমন কিছু হয়নি। দুই পক্ষের রক্তক্ষয়ী এ লড়াইয়ে বেসামরিক নাগরিকসহ বহু প্রাণহানি ঘটেছে। দুই দেশের সংঘাতের মূলে ওই নাগরনো-কারাবাখ অঞ্চল। এলাকাটি জাতিগত আর্মেনীয় অধ্যুষিত। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের সময় ভোটাভুটিতে অঞ্চলটি আর্মেনিয়ার সঙ্গে থাকার পক্ষে রায় দেয়। এরপর বিষয়টি নিয়ে আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ার মধ্যে যুদ্ধ বেধে যায়। ১৯৯০ সালের ওই যুদ্ধে প্রায় ৩০ হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটে।

সেই যুদ্ধ থামে ১৯৯৪ সালের এক যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে। এরপর থেকে এলাকাটি আন্তর্জাতিকভাবে আজারবাইজানের অংশ হিসেবে স্বীকৃত। কিন্তু আর্মেনীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিয়ন্ত্রণে। তাদের সমর্থনে আর্মেনিয়ার সরকার। আন্তর্জাতিক পরাশক্তিগুলোর মধ্যস্থতায় দশকের পর দশক আলোচনা হলেও শান্তিচুক্তি অধরা থেকে গেছে। সবশেষ গত মঙ্গলবার থেকে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের সঙ্গে রাশিয়ার যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাস্তবায়ন হয়। এতে বিরোধীয় কারাবাখ অঞ্চলে রাশিয়ার শান্তিরক্ষীবাহিনী পর্যবেক্ষণ করার কথা রয়েছে। এদিকে বুধবার তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোগান ঘোষণা দেন, রাশিয়ার সঙ্গে সমঝোতা স্বারকে স্বাক্ষর হয়েছে তুরস্কের। এতে করে মস্কোর সেনাবাহিনীর সঙ্গে আঙ্কারার সেনাবাহিনী পর্যবেক্ষণ করবে।