ফেনীতে সরিষা মাঠে অন্যরকম কৃষক আড্ডা

ফেনী: বিশাল মাঠ ও চারপাশেই হলুদ আর হলুদ। সরিষা ফুলের রূপে সেজেছে প্রাণ-প্রকৃতি। বিশাল মাঠের মাঝ খানটায় এক টুকরো জমি খালি পড়ে আছে সেখানেই বসেছে ব্যতিক্রমী আড্ডা। কৃষক, বীর মুক্তিযোদ্ধা, জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন ও সাংবাদিক, ছাত্র, শিক্ষক-সবার বক্তব্যের বিষয় কৃষি। এ এক অন্যরকম কৃষি আড্ডা।ফেনী সদর উপজেলার মৌটবী ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামের সরষে ফুলের মাঠে ফেনী সদর উপজেলা চেয়ারম্যান শুসেন চন্দ্র শীল ব্যতিক্রমী এই আয়োজন করেন।ফেনী সদর উপজেলা কৃষি অফিস অফিসের সহায়তায় এ আড্ডায়

অতিথি হয়ে বক্তব্য রাখেন ফেনী সদর উপজেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা আনোয়ার হোসাইন পাটোয়ারী, বীর মুক্তিযোদ্ধা সাংবাদিক আবু তাহের, সদর উপজেলা কৃষি অফিসার শারমীন আক্তার, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা উম্মে সালমা, সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শহীদ খোন্দকার, স্টার লাইন গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান জাফর উদ্দিন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান জোৎসনা আরা জুসি, কালিদহ ইউপি চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন ডালিম, মোটবী ইউপি চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ প্রমুখ।সাংবাদিকদের মধ্য থেকে আড্ডায় মতামত ব্যক্ত করেছেন

আরিফুল আমিন রিজভী, আতিয়ার সজল, আরিফুর রহমান, জসিম মাহমুদ, নাজমুল হক শামীম, এমরান পাটোয়ারি, রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।আড্ডায় বক্তারা বলেন, চলতি মৌসুমে ফেনীতে বেড়েছে সরিষার আবাদ। কৃষকরা আগের থেকে বেশি আগ্রহী হয়ে উঠেছে সরিষার আবাদে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃষিতে উৎপাদন বাড়ানোর জন্য দেশের মানুষকে অনুরোধ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী সেই অনুরোধে কৃষকরা সাড়া দিয়েছেন। সরকারের প্রণোদনা ও সহায়তার কারণে সরিষার উৎপাদন বাড়ছে।ফেনী সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আনোয়ার হোসাইন

পাটোয়ারী বলেন, একজন কৃষকও বাদ যাবে না। সব কৃষক সরকারের পক্ষ থেকে ভর্তুকি মূল্যে সার ও বীজ পাবেন। একজন কৃষকও বাদ যাবে না। সবাই কৃষি প্রণোদনা পাবেন।ফেনী সদর উপজেলা চেয়ারম্যান শুসেন চন্দ্র শীল বলেন, ছোটবেলায় মাঠ ভর্তি সরষের চাদরে ডেকে থাকত, মাঠের সেই চিরচেনা রূপ আবার ফিরে এসেছে। আমি অভিনন্দন জানাই কৃষক ভাইদের যারা প্রণোদনা পেয়েছেন সবাই মাঠে সরিষার আবাদ করেছেন। এই সরিষা যদি আমরা ভালোভাবে চাষাবাদ করে তেল উৎপাদন করতে পারি তাহলে আমাদেরকে অন্য দেশের দিকে তাকিয়ে

থাকতে হবে না। আমরা আমাদের উৎপাদিত তেল দিয়ে সারা বছর চাহিদা মেটাতে পারব।সদর উপজেলার মোটবীর লক্ষ্মীপুর ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা জহির উদ্দিন বলেন, তার ব্লকে ৩৪ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ হয়েছে। গেল বছর আবাদ ছিল ৫ হেক্টর জমিতে। চলতি বছর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪০ মেট্রিক টন সরিষা। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানান, গত বছর এ জেলায় সরিষার আবাদ হয়েছিল ১৮০৬ হেক্টর। চলতি বছরে চাষ হয়েছে ৩৪৯৪ হেক্টর।

লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়ে আবাদের পরিমাণ বেড়েছে ১১৪৭ হেক্টর। চলতি বছরের চাষাবাদের হিসেবে ৪৬৭০ মেট্রিক টন সরিষা উৎপাদন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কৃষি বিভাগ জানায় প্রতি এক কেজি সরিষা থেকে ৪০০ গ্রাম সরিষার তেল পাওয়া যায়। সংশ্লিষ্টরা জানান, দেশে সরিষার চাষ বাড়লে সরিষার তেলের চাহিদা পূরণে আমরা আরও বেশি ভূমিকা পালন করতে পারবে।