এবার কৃষকদের মধ্যে আশার আলো জাগিয়েছে ‘বিনা ধান-১৭’

উত্তরের শস্য ভাণ্ডার দিনাজপুরে আমন মৌসুমে আগামজাতের ‘বিনা ধান-১৭’ কৃষকদের মধ্যে আশার আলো জাগিয়েছে। স্বল্পমেয়াদী ও খরাসহিষ্ণু হওয়ায় এ জাতের ধান চাষ লাভজনক বলে জানিয়েছে কৃষকেরা।প্রতি একরে ফলন আসছে ৬০ থেকে ৭০ মণ। কার্তিকের প্রথম সপ্তাহে এ ধান ঘরে তুলতে পেরে এবং এধানের ফলন ও দামও ভালো পেয়ে খুশি কৃষক। এ ধান কাটার পর পরিত্যক্ত জমিতে আলু, সরিষাসহ চাষ হচ্ছে শীতকালীন বিভিন্ন সবজি। এতে বাড়ছে জমিতে ফসলের নিবিড়তা।সরজমিনে

দেখা গেছে, দিনাজপুরের বিরল উপজেলার পুরিয়া গ্রামের রাষ্ট্রীয় পুরস্কার প্রাপ্ত বিএডিসি’র চুক্তিবদ্ধ কৃষক মতিউর রহমান ২য় বারের মতো এবার ৫২ একর জমিতে চাষ করেছেন ‘বিনা ধান-১৭’। পেয়েছেনও আশাতীত ফলন।আদর্শ কৃষক মো. মতিউর রহমান জানান, ১১০ থেকে ১১৫ দিনের জীবনকাল স্বল্পমেয়াদী ও খরাসহিষ্ণু বিনা ধান-১৭’র প্রধান বৈশিষ্ট্য। এ ধানে সার-সেচ কম লাগে। বিনা ধান-১৭ স্বল্প জীবনকালীন হওয়ায় ধান কাটার পর ওই একই জমিতে তিনি সরিষা এবং আলু চাষ করবেন।

পরে জমি তৈরি করে আবার লাগাবেন বোরো ধানের চারা। তার ফলন দেখে এ ধান চাষে আগ্রহী অনেকে কৃষক। শুধু কৃষক মতিউর রহমান নয়, দিনাজপুরের বেশ কয়েকজন কৃষক এবার চাষ করেছেন ‘বিনা ধান-১৭’। এ ধান চাষে ভালো ফলন পেয়ে উৎফুল্ল তারা।এ ধান কাটা উৎসবে মাঠে উপস্থিত বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন

কর্পোরেশন-বিএডিসি দিনাজপুর অঞ্চলের কন্ট্রাক্ট গ্রোয়ার্স এর উপ-পরিচালক মো. কামরুজ্জামান সরকার জানিয়েছেন, অন্যান্য জাতের চাইতে ৩০ ভাগ পানি কম লাগে। তাই বিনা ধান-১৭ কে তিনি গ্রীণ সুপার রাইস নামে অভিহিত করেন এই কৃষিবিদ।

বিনা ধান-১৭’র চাষাবাদের পরিধি বাড়াতে ও কৃষককে বীজ সংরক্ষণেরও পরামর্শ দিচ্ছেন বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন-বিএডিসি এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। এমনটাই জানিয়েছেন দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. তৌহিদুল ইকবাল।তিনি জানান, দিনাজপুরে এবার ১২’শ ৭০ হেক্টর জমিতে

এ জাতের ধানের চাষাবাদ হয়েছে। আগাম আমন ধান বিনা-১৭ চাষাবাদ করে এবারো ব্যাপক সাফল্য পেয়েছেন কৃষক মতিবুর রহমান। তার এই সাফল্য এখন অসেকের অনুপ্রেরণা।সংশ্লিষ্ট বিভাগের সহযোগিতা অব্যাহত থাকলে এবং এধানের ভালো দাম পেলে, এ অঞ্চলে বিনা-১৭ ধান চাষাবাদের পরিথি আরো বেড়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন সংশ্লিষ্টরা।