মরেছে মরুক, আবার মরবে, আপনারা বহাল তবিয়তে থাকবেন

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে দুই ট্রেনের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় অন্তত ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (২৩ অক্টোবর) পৌনে ৪টার দিকে জগন্নাথপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এরই মধ্যে বগির নিচ থেকে ২০ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বাকিদের উদ্ধার কাজ চলছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। ভৈরব উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. ইকবাল হোসেন দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২৫ জন নিহত হওয়ার কথা নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে দুই ট্রেনের সংঘর্ষের ঘটনা রেল মন্ত্রী ও দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উদ্যেশ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে আবেগঘন পোস্ট করেছেন অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবীর মিলন।

বিডি২৪লাইভ ডটকমের পাঠকদের জন্য পোস্টটি হুবুহু তুলে ধরা হলো- ‘ভৈরব ট্রেন এক্সিডেন্টে আজ অনেকগুলো হতভাগা মারা গেছে। অসংখ্য আহত। একটি যাত্রীবাহী ট্রেনের পাশ দিয়ে অন্য একটি মালগাড়ী সরাসরি উঠিয়ে দিয়েছে। রেল মন্ত্রী মহোদয়, রেল সচিব, ডিজি মহোদয়, কারো কী অন্তর পুড়েছে আপনাদের? কারো চোখ কী ভিজে গিয়েছিল এই মৃত্যুগুলো দেখে? একটুও কষ্ট পেয়েছেন কী আপনারা? আজ রাতে ঘুম হবে কী আপনাদের? কেউ পদত্যাগ করবেন কী? কয়দিন পরপরই তো মুখোমুখি সংঘর্ষে লোক মরছে। ২০/২৫ হাজার টাকা হাতে গুঁজে দিয়ে সব ঠাণ্ডা হয়ে যাচ্ছে!! জীবনের কী এতই কম দাম আমাদের!!

ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ রোধে এক কোম্পানি ডিভাইস রেডি করে বসে আছে আজ দুবছর হয়ে গেছে। আমি প্রতি এক্সিডেন্টের পরেই ডিজি সাহেবকে একাধিকবার ফোনে বলেছি এই ডিভাইসের কথা। সেই ভদ্রলোক রেল ভবনে গিয়ে কারো কাছে পাত্তা পায়নি। একবারের জন্য কি তাঁর ডিভাইস ট্রায়াল দিয়ে দেখছেন? দুইটি ইঞ্জিন না হোক, দুটি ট্রলিতে সেট করেও তো পরীক্ষা করতে পারতেন!! সচিব মহোদয় তো আমার ফোনও ধরেন না। ঐ অফিসিয়াল ফোন নম্বরে আমার নাম, নম্বর সব সেভ করা আছে। মেসেজ দিয়েছি, কিন্তু কল ব্যাক করার সৌজন্যটুকুও দেখাননি তিনি। অথচ তিনি আমার জুনিয়র। তাহলে আর কাকে বলব!!

এই ডিভাইস অত্যন্ত কার্যকর, আমি যতটুকু জানি। এক লাইনে দুই ট্রেন কখনোই প্রবেশ করবে না, যদি সিগনাল ভুলও হয়। অটোমেটিক দুই ট্রেন থেমে যাবে। দুর্ভাগ্য আজ দুই বছর যাবত চেষ্টা করেও রেলের বিন্দুমাত্র নজর কাড়া সম্ভব হয়নি। অথচ এই কোম্পানির অন্য ডিভাইস (জিপিএস) দিয়ে রেল চলছে অনেকদিন যাবত। মরেছে মরুক। আবার মরবে। আপনারা বহাল তবিয়তে থাকবেন। চিন্তা নেই। আমি আপনাদের সবার পদত্যাগ দাবী করছি।’