এক পরিবারের ৪ জনকে হারিয়ে বিয়ে বাড়িতে শোকের মাতম

মোছা: মঞ্জু বেগম (৬০) পরিবারে পাঁচজন সদস্যকে সাথে নিয়ে অসুস্থ মা’কে দেখতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলার চম্পকনগর ইউনিয়নের গেরাগাঁও গ্রাম থেকে চম্পকনগর নৌকাঘাট দিয়ে রোয়ানা হয়েছিলেন। পথিমধ্যে লইস্কার বিলে বালুবাহী ট্রলারের ধাক্কায় নৌকাডুবিতে মঞ্জু বেগম’সহ পরিবারের আরও তিনজনের মৃত্যু হয়।

বিজয়নগর উপজেলা গেরাগাঁও গ্রামে রাত ১১টায় মৃত পরিবারের সদস্য মোছা: লুৎফা বেগমের (২৫) সাথে কথা হলে তিনি রাইজিংবিডিকে জানান, আমার শাশুড়ির (মঞ্জু বেগম) বাবার বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পৌরশহরের পৈরতলায়। আজ বিকেলে শাশুড়ি মঞ্জু বেগম, ননদ ফরিদা বেগম (৪০), ফরিদা বেগমের ছোট্ট মেয়ে মুন্নি আক্তার (৯), ফরিদা বেগমের মা কমলা বেগম (৬৫) ও সাহারা বেগম (৬০) এক সাথে নৌকা দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৈরতলায় শাশুড়ির অসুস্থ মা’কে দেখতে যাচ্ছিলেন। কিন্তু অসুস্থ মাকে না দেখেই নিজেই পানিতে ডুবে মারা গেলেন।

এভাবে কথা বলতেই কান্নায় জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন লুৎফা বেগম। লুৎফা বেগমের মতো এমন অনেকেই বাড়িতে জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে ও বিছানায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। নৌকায় ৪ জনের মৃত্যু হলেও মঞ্জু বেগমের সাথে যাওয়া সাহারা বেগম বেঁচে আছেন। সাহারা বেগম রাত ১০টায় হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে ফিরে এসে কয়েকবার জ্ঞান হারিয়েছেন এবং একটু পরে পরে ভয়ে চিৎকার করে উঠেন বলেও লুৎফা বেগম জানান।

উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিবারের কোন খবর নিয়েছে কিনা প্রশ্ন করলে লুৎফা বেগম জানান, নৌকাডুবে পরিবারের চারজন সদস্যের মৃত্যু হলেও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, মেম্বার বা ইউএনও রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত আমাদের খবর নেয়নি।

এ ব্যাপারে বিজয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ইউএনও রাবেয়া আফসার সায়মাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, পরিবারে লাশ নিয়ে আসলে দেখতে যাবো। ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও মেম্বারও তাদেরকে একটু শান্ত্বনা দিতে আসলেন না এই প্রশ্নের জবাবে তিনি চুপ করে যান।