৭৫ বছরে কখনো এমন পরিস্থিতিতে পড়েনি ইসরাইল

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ইসরাইলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। শনিবার (৭ অক্টোবর) সকালে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে এসব রকেট হামলা শুরু করে হামাস। হামলার প্রথম ২০ মিনিটেই ৫ হাজার রকেট ছোড়ার কথা জানিয়েছে হামাস।

ইসরায়েলের অভ্যন্তরেও হামলা চালানো হয়েছে বলে তেল আবিব থেকে জানানো হয়েছে। জবাবে গাজায় পাল্টা হামলা চালায় ইসরাইল। এ পর্যন্ত শনিবার (৭ অক্টোবর) সকাল থেকে চালানো এই হামলায় নিহত ইসরায়েলিদের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৩০০। এছাড়া ভয়াবহ এই হামলায় আহত হয়েছে আরও প্রায় ১৬০০ ইসরায়েলি।

বিবিসি জানিয়েছে, ১৯৪৮ সালের পর- অর্থাৎ গত ৭৫ বছরে কখনো এমন পরিস্থিতিতে পড়েনি দখলদার ইসরাইল।বিবিসির আন্তর্জাতিক বিষয়াবলীর সম্পাদক জেরেমি বাওয়েন বলেছেন, ১৫ বছর আগে হামাস গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ নেয়। কিন্তু এই ১৫ বছরে তারা কখনো এ ধরনের কোনো কিছু করেনি। ফিলিস্তিনি ও ইসরাইলিদের মধ্যে মাঝে মাঝে সংঘর্ষ হয় হয়। কিন্তু সেগুলো মূলত পশ্চিম তীরে হয়ে থাকে। এই পশ্চিম তীর জেরুজালেম থেকে শুরু করে জর্ডান সীমান্ত পর্যন্ত বিস্তৃত।

শনিবার সকালে যেভাবে হামাসের শত শত যোদ্ধা ইসরাইলে প্রবেশ করেছেন তা ইসরাইলিরা কখনো কল্পনাও করেনি। এছাড়া চেকপোস্টে থাকা ইসরাইলি সেনাদের যেভাবে হামাসের সদস্যরা ধরে নিয়ে এসেছেন সেটি অনেকের কাছে বিষ্ময় মনে হয়েছে।

তবে হঠাৎ কেন এমন কঠোর সামরিক অবস্থান নিল হামাস? আলজাজিরার তথ্যমতে, ইসরাইলি দখলদারিত্বের ইতি টানতেই হামাস এ সামরিক পদক্ষেপ নিয়েছে। ‘অপারেশন আল-আকসা স্টর্ম’ পরিচালনার মাধ্যমে দশকের পর দশক ধরে চলা ইসলাইলি দখলদারিত্ব, শোষণ ও বঞ্চনার জবাব দেওয়া হচ্ছে বলে আল-জাজিরাকে জানিয়েছেন হামাস মুখপাত্র খালেদ কারামি।

তিনি বলেন, আমরা চাই বিশ্বের শক্তিশালী রাষ্ট্র এবং পুরো বিশ্বের মানুষ আমাদের ওপর পরিচালিত অত্যাচারের কথা জানুক। আমরা চাই আমাদের মানুষ এবং আমাদের ভূখণ্ডের ওপর, আমাদের পবিত্র প্রার্থনা কেন্দ্র আল-আকসার দখলদারিত্ব থেকে ইসরাইলিরা সরে যাক। অনেক বছরের পুঞ্জিভূত অত্যাচার ও দখলদারিত্বের জবাব দিতেই আমরা প্রতিরোধ যুদ্ধ শুরু করেছি।

ইসরাইলি দখলদারিত্ব এবং শোষণের অবসানে বিশ্ববাসীকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।

এদিকে হামাসের সামরিক কমান্ডার মুহাম্মদ দেইফ বলেন, আমরা অপারেশন আল-আকসা স্টর্ম শুরু করে দিয়েছি। এ অভিযানের মধ্য দিয়ে বিশ্বের বুকে ইসরাইলি দখলদারিত্বের অবসান হবে।

দেশপ্রেমিক সব ফিলিস্তিনিকে যুদ্ধে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

শনিবার (৭ অক্টোবর) সকাল থেকে চালানো এই হামলায় এখন প্রর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ইসরায়েলিদের ছাড়িয়েছে ৩০০। এছাড়া হামাসের ভয়াবহ এই হামলায় আহত হয়েছে আরও প্রায় ১৬০০ ইসরায়েলি। রোববার (৮ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল।