শিশুটি জানেও না তার পুলিশ অফিসার বাবা আর কখনো ফিরবে না

এমন হাসিখুশি পরিবারে এখন বি’ষাদের ছায়া। পিতার কোলে আর যেতে পারবে না ছোট্ট শি’শুটি। শি’শুটি জানেও না তার পুলিশ অফিসার বাবা কখনো ফিরবে না। তিনি নিথর হয়ে গেছেন। পৃথিবীর নি’র্মম নিষ্ঠুরতার শি’কার হয়ে না ফেরার দেশে বাবামা’নসিক স’মস্যায় ভুগে রাজধানীর আদাবরে মাইন্ড এইড হাসপাতালে ভর্তি হওয়া সহকারী পুলিশ সুপার আনিসুল করিমকে পি’টিয়ে হ’ত্যার অ’ভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল সোমবার সকালে হাসপাতালে ভর্তির কয়েক মিনিটের মধ্যেই এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় জি’জ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হাসপাতালের ব্যবস্থাপকসহ ছয়জনকে আ’টক করেছে।পরিবারের অ’ভিযোগ, হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাঁকে পি’টিয়ে হ’ত্যা করেছেন। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করলে তাঁরা ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে শান্ত করার চেষ্টা করছিলেন। ওই সময় তিনি অ’সুস্থ হয়ে পড়েন। আনিসুল করিম। ম’র্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের আদাবর থানায়।

আনিসুল করিমের ভাই রেজাউল করিম জানান, আনিসুল পারিবারিক ঝামেলার কারণে মা’নসিক স’মস্যায় ভুগছিলেন। গতকাল সকাল সাড়ে ১১টার দিকে তাঁকে মাইন্ড এইড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর তাঁরা ভর্তির ফরম পূরণ করছিলেন। ওই সময় কাউন্টার থেকে হাসপাতালের কয়েকজন কর্মচারী তাঁকে দোতলায় নিয়ে যান। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই তাঁরা জানান যে আনিসুল অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছেন। তাঁকে দ্রুত হৃদরো’গ ইনস্টিটিউটে নিলে চিকিৎসক পরীক্ষা করে মৃ’ত ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, ‘আমার ভাইয়ের উচ্চ র’ক্তচা’প ও হৃদরো’গজনিত স’মস্যা থাকলেও তা তেমন প্রকট ছিল না। হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পি’টুনিতেই তাঁর মৃ’ত্যু হয়েছে।’

এদিকে ওই হাসপাতাল থেকে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে তা যাচাই করেছে পুলিশ। ওই ফুটেজের বর্ণনা দিয়ে এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, পুলিশ কর্মকর্তা আনিসুল করিমকে সকাল ১১টা ৫৫ মিনিটের দিকে টানাহেঁচড়া করে হাসপাতালটির একটি কক্ষে ঢোকানো হয়। এ সময় হাসপাতালের ছয়জন কর্মচারী মিলে তাঁকে মাটিতে ফে’লে চে’পে ধরেন। তখন নীল পোশাক পরা আরো দুজন কর্মচারী তাঁর পা চে’পে ধরেন। আর মাথার দিকে থাকা দুজন কর্মচারীকে হাতের কনুই দিয়ে তাঁকে আ’ঘাত করতে দেখা যায়।

একটি নীল কাপড়ের টুকরা দিয়ে আনিসুলের হাত পেছনে বাঁ’ধা ছিল। হাসপাতালের ব্যবস্থাপক আরিফ মাহমুদ তখন পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন। এর চার মিনিট পর আনিসুলকে যখন উপুড় করা হয় তখনই তাঁর শরীর নিস্তেজ ছিল। একজন কর্মচারী তখন তাঁর মুখে পানি ছিটালেও আনিসুল নড়াচড়া করছিলেন না। তখন কর্মচারীরা কক্ষের মেঝে পরিষ্কার করেন। সাত মিনিট পর সাদা অ্যাপ্রন পরা এক নারী কক্ষটিতে প্রবেশ করেন। ১১ মিনিটের মাথায় কক্ষটির দরজা লাগিয়ে দেওয়া হয়। ১৩ মিনিটের মাথায় তাঁর বুকে পাম্প করেন সাদা অ্যাপ্রন পরা ওই নারী।

শেরেবাংলানগর থানার ওসি জানে আলম মিয়া বলেন, হাসপাতালের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে ঘটনার ত’দন্ত চলছে। জি’জ্ঞাসাবাদের জন্য হাসপাতালের ছয়জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে আ’টক করা হয়েছে। আনিসুলের ম’রদেহের ম’য়নাত’দন্ত করা হয়েছে। হাসপাতালের সমন্বয়ক ইমরান খান জানান, জাতীয় মা’নসিক

ইনস্টিটিউট থেকে আনিসুল হককে তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল।ভর্তির পরপরই তিনি উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করছিলেন। মা’রধর করছিলেন যাকে-তাকে। শান্ত করার জন্য তাঁকে একটি কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সিসি ক্যামেরার ফুটেজের বরাত দিয়ে পুলিশ কর্মকর্তাকে মা’রধরের বি’ষয়ে জানতে জাইলে তিনি বলেন, ওই সময় তিনি হাসপাতালে ছিলেন না।