সাপ্তাহিক ছুটির দিনে সৈকত শহর কক্সবাজারে ভিড় করছে লাখো পর্যটক। আনন্দ আর হৈ-হুল্লোড়ে কাটছে তাদের প্রতিটি মুহূর্তে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মানার কোন বালাই নেই। মাস্ক পরা নিয়ে নানা অজুহাত দিচ্ছেন পর্যটক আর সৈকতের ব্যবসায়ীরা। আর সাইনবোর্ডে নির্দেশনা টাঙ্গিয়ে দায়িত্ব শেষ প্রশাসনের। বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার। সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় বেলা যতই বাড়ছে ততই সৈকতে নামছে পর্যটক। পর্যটকের পদচারণায় মুখর সৈকতের সবকটি পয়েন্ট। সাগর তীরে সমুদ্র স্নান, ছবি তোলা ও টিউব নিয়ে গা ভাসিয়ে আনন্দে কাটছে পর্যটকদের প্রতিটি মুহূর্ত।
হুমায়ন কবির নামে এক পর্যটক বলেন, দীর্ঘদিন ঘরবন্দী ছিলাম। এখন একটু সময় পাওয়াতে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে পরিবার-পরিজন নিয়ে কক্সবাজারে ছুটে আসলাম। এখানে পরিবার-পরিজনের সাথে আনন্দ করে দারুণ সময় কাটছে।সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্ট। করোনা পরিস্থিতির কারণে এই পয়েন্টের প্রবেশদ্বারেই টাঙানো আছে মাস্ক ছাড়া বিচে প্রবেশ করবেন না। এছাড়া আরও একটি সাইনবোর্ডে টাঙানো আছে নানা নির্দেশনা। কিন্তু আগত পর্যটকরা কেউ এই নির্দেশনা পড়ছেন না, কিংবা মাস্কও পরছেন না। এই অবস্থা সৈকতের ব্যবসায়ীদেরও।
পর্যটক ও ব্যবসায়ীরা মাস্ক ব্যবহার না করা নিয়ে দিচ্ছেন নানা অজুহাত।টঙ্গি থেকে আসা পর্যটক সিরাজুল হক বলেন, মাস্ক আছে কিন্তু হোটেলের রুমে রেখে এসেছি। পরবর্তীতে সৈকতে আসলে পড়ে আসবো। আরেক পর্যটক রিয়াজ বলেন, মাস্ক পরা এটা একটা ভাল বিষয়। কিন্তু দেখেন সৈকতে যারা এসেছে তার মধ্যে এক শতাংশ মানুষ মাস্ক পড়েছে। কিন্তু বাকি ৯৯ শতাংশ মানুষ মাস্ক পড়েনি। মাস্ক ছাড়া যে করোনা হবে না এটা কিন্তু বলা যাবে না।
এদিকে সৈকতে জেড স্কী ব্যবসায়ী হারুন বলেন, মাস্ক ব্যবহার করি। কিন্তু সৈকতের পানিতে নেমে একটা ভেসে গেছে। তাই আর পরা হয়নি। কিন্তু উপরে দোকানে গেলে আরেকটা কিনে মুখে ব্যবহার করব।
ফটোগ্রাফার তৌহিদ বলেন, সৈকতে তো কেউ মাস্ক ব্যবহার করছে না। তাই আমিও ব্যবহার করছি না। আর আমাদের প্রশাসনও কিছু করে না।সাপ্তাহিক ছুটি দিনে বিপুল সংখ্যক পর্যটকের আগমন হলেও করোনায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে প্রশাসনের প্রচারণামূলক মাইকিং করার কথা থাকলেও সৈকতে তা দেখা যায়নি। তবে টুরিস্ট পুলিশ বলছেন, পর্যটকদের সচেতন করতে কাজ করছেন তারা।
টুরিস্ট পুলিশের উপ-পরিদর্শক মিঠুন দত্ত বলেন, ‘মাস্ক ছাড়া সৈকতে প্রবেশ নিষেধ, প্রশাসনের পক্ষ থেকেও বলা হয়েছে। কিন্তু আগত পর্যটকরা এই নির্দেশনা যথাযথভাবে পালন করছে না। তবে টুরিস্ট পুলিশ এ ব্যাপারে কাজ করছে। পর্যটকদের সচেতন করতে মাইকিং ও বোঝানোর চেষ্টা করছি সৈকতে প্রবেশের সময় যাতে মাস্ক ব্যবহার ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখে।’পর্যটন ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, নভেম্বর মাস থেকে শুরু হওয়া পর্যটন মৌসুমে কক্সবাজারে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে প্রতিদিন লক্ষাধিক পর্যটকের আগমন হচ্ছে।