ভুল চিকিৎসায় নার্সের মৃত্যুর অভিযোগ

মেহেরপুর শহরের রমেশ ক্লিনিকে ভুল চিকিৎসায় স্বর্ণালী খাতুন নামে এক নার্সের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। আজ শনিবার সকালে অ্যাম্বুলেন্সে তাঁকে সিরাজগঞ্জ আনোয়ারা হার্ট ফাউন্ডেশনে নেওয়া হলে চিকিৎসক জানান, হাসপাতালে আনার অনেক আগেই রোগীর মৃত্যু হয়েছে।

স্বর্ণালী রমেশ ক্লিনিকের সিনিয়র স্টাফ নার্স ছিলেন। তাঁর দুলাভাই লিখন আলী ও পরিবারের লোকজনের অভিযোগ, অ্যানেস্থেশিয়ার সময় মাত্রাতিরিক্ত ওষুধ প্রয়োগের কারণে স্বর্ণালীর আর জ্ঞান ফেরেনি। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে তাদের পরিবারকে চাপ দেওয়া হচ্ছে।

রমেশ ক্লিনিকে দায়িত্ব পালনকালে গত বৃহস্পতিবার বিকেলের দিকে স্বর্ণালীর পেটে ব্যথা শুরু হয়। এ সময় ঢাকা থেকে আসা ক্লিনিকের চিকিৎসক জাহিদ হাসান বিপু তাঁর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানান, অ্যাপেন্ডিসাইটিসের ব্যথা উঠেছে এবং এটা ক্রিটিক্যাল অবস্থায় আছে। এক্ষুনি অপারেশন করতে হবে। সন্ধ্যায় স্বর্ণালীর পরিবারকে কিছু না জানিয়েই তাঁকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়। অপারেশনের আগে অবেদনবিদকে না ডেকে হাসপাতালের ম্যানেজার শহিদুল ইসলাম ফোনে অবেদনবিদের পরামর্শ নিয়ে অ্যানেস্থেশিয়া প্রয়োগ করেন। এর পর অপারেশন শেষে তাঁর জ্ঞান না ফিরলে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউ বিভাগে ভর্তি করা হয়।

তবে হাসপাতালের ম্যানেজার শহিদুলের দাবি, অবেদনবিদ মেহেদি হাসান নিজে অ্যানেস্থেশিয়া দিয়েছেন। স্বর্ণালীর মৃত্যুর সংবাদ মেহেরপুরে পৌঁছালে ক্লিনিকটি ভেতর থেকে তালা বন্ধ করে রাখা হয়েছে। প্রতিবাদে এলাকাবাসী ক্লিনিক ঘেরাও করায় পরিবেশ শান্ত রাখতে মেহেরপুর থানা পুলিশ ও ডিবি পুলিশের দুটি ইউনিট মোতায়েন করা হয়েছে।

রমেশ ক্লিনিকের ম্যানেজার শহিদুল ইসলামে বলেন, তিনি অ্যানেস্থেশিয়া প্রয়োগ করেননি। এ ছাড়া আর কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।

মেহেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) কামরুল আহসান বলেন, স্বর্ণালীর পরিবারকে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত সাপেক্ষে এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মেহেরপুরের সিভিল সার্জন জাওয়াহেরুল আনাম সিদ্দিকী বলেন, অভিযোগ পেলে তদন্ত বোর্ড গঠন করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।