হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মুক্তি দিতে সরকারকে আল্টিমেটাম দিয়েছে বিএনপি। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দেশনেত্রী বেগম খালেদ জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে।
নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে খালেদা জিয়ার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবিতে আয়োজিত সমাবেশ থেকে এ আল্টিমেটাম দেন ফখরুল।
মির্জা ফখরুল আলমগীর বলেন, পরিষ্কার করে বলতে চাই, দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মুক্তি দিতে হবে। তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাতে হবে। ছল-চাতুরি করে কোনো লাভ নেই, আবেদন করেনি, হয়নি।
পরিবার থেকে যে চিঠি দেওয়া হয়েছিল, সেখানে মুক্তির কথা বলা ছিল। একইভাবে চিকিৎসার জন্য তার বাইরে যাওয়ার কথাও বলা হয়েছিল। আপনারা (সরকার) সেটাকে চেপে গিয়ে বেমালুম মিথ্যা কথা বলছেন।
ফখরুল আরও বলেন, শুভ বুদ্ধির উদয় হোক আপনাদের। গণতন্ত্রের মাতাকে মুক্তি দিয়ে প্রমাণ করুন আপনারা (সরকার) কিছুটা হলেও গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেন। অন্যথায় আপনাদের দেশের মানুষ আর ওই অবৈধ ক্ষমতায় থাকতে দেবে না। টেনে-হিঁচড়ে নামাবে।
দেশের মানুষ স্যাংশন দিচ্ছে এই সরকারকে। দেশের মানুষ পরিষ্কার ভাষায় এক বাক্যে বলছে, অনেক হয়েছে, অনেক অত্যাচার-নির্যাতন করেছো, কারাগারে আটক করে রেখেছ আমাদের নেতাদের। আর আমরা সেটা হতে দেবো না।
তিনি আরও বলেন, এখন সময় আছে, শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের কথা ভেবে নিয়ে পদত্যাগ করুন। সংসদ বিলুপ্ত করে নির্দলীয় সরকারের হাতে ক্ষমতা দিয়ে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে নির্বাচন দিয়ে রাজনৈতিক সংকট দূর করুন। অন্যথায় তার সব দায়িত্ব আপনাদের নিতে হবে।
দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। বিএনপি নেতারাও অনেক দিন ধরে বলে আসছেন উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়া জরুরি। দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত খালেদা জিয়ার বিদেশে যাওয়ার সুযোগ নেই বলে বারবার বলে আসছে সরকার।
গতকাল সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়ার বিষয়ে আমার কাছে কোনো আবেদন আসেনি। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করতে হবে। এরপর আমাদের কাছে মতামত চাওয়া হবে।
তবে বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলছেন, বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য পাঠানোর আবেদন অনেকে আগেই করা হয়েছে। তাই এ বিষয়ে নতুন করে আবেদন চাওয়া অমানবিক।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আজ এ বিষয়ে বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়া একটি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি। প্রধানমন্ত্রী তার কথা চিন্তা করে দণ্ড স্থগিত করে বাসায় থেকে উন্নত চিকিৎসা নেওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। বাংলাদেশের সবচেয়ে ভালো ডাক্তার ও উন্নত একটি হাসপাতালে তিনি চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন। তাকে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে আইনগত জটিলতা রয়েছে। এ ক্ষেত্রে আদালতের অনুমোদনের প্রয়োজন হতে পারে।