বাসরঘরে ঢোকার মুখে বরের মৃত্যু!

বিয়ে করে এনে নববধূর মুখ দেখার আগেই চিরবিদায় নিল শাকিল (২৫)। বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) রাজশাহীর গোদাগাড়ীর দেওপাড়া ইউনিয়নের খারিজাগাতি মোল্লাপাড়া গ্রামের আব্দুস সালামের ছেলে শাকিল ধুমধাম করে বিয়ে করে নববধূকে নিয়ে বাড়িতে আসেন।

এদিন রাত সাড়ে ৮টার দিকে বাসরঘরে প্রবেশের সময় বিয়ের প্যান্ডেলে আলোকসজ্জার বৈদ্যুতিক তারে জড়িয়ে ঘটনাস্থলেই মর্মান্তিক মৃত্যু হয় শাকিলের।

মুহুর্তের মধ্যে আনন্দ উচ্ছ্বাস পরিণত হয় বিষাদে। শোকে নিমজ্জিত হন পরিবারের লোকেরা। বারবার মূর্ছা যেতে থাকেন নববধূ। শোকবিহ্বল হয়ে পড়েন পুরো এলাকার মানুষ।

গোদাগাড়ীর মাটিকাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহেল রানাসহ এলাকাবাসী জানান, বৃহস্পতিবার বেশ ধুমধামের সঙ্গের মাটিকাটার বুলবুল হোসেনের মেয়ে আসমা খাতুনের সঙ্গে বিয়ে হয় পার্শ্ববর্তী দেওপাড়া ইউনিয়নের খারিজাগাতি মোল্লাপাড়া গ্রামের আব্দুস সালামের ছেলে শাকিলের।

বিয়ে আনুষ্ঠানিকতা শেষে সন্ধ্যার আগে নববধূকে নিয়ে বাড়িতে ফেরেন শাকিল ও তার স্বজনরা। নববধূ শ্বশুরবাড়িতে পৌঁছালে তাকে দেখতে ছুটে আসেন গ্রামের মানুষ।

শাকিলদের বাড়িতে তখন বইছে আনন্দের ঢেউ। বাড়ির বাইরে বিয়ে প্যান্ডেলে আলোকসজ্জায় ঝলমল করছিল পুরো বাড়িটি।

এদিকে রাত সাড়ে ৮টার সময় বাসরঘরে প্রবেশকালে আলোকসজ্জা প্যান্ডেলের একটি বৈদ্যুতিক তারের স্পর্শে বিদ্যুৎস্পর্শ হয়ে অচেতন হয়ে পড়েন শাকিল। উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

খবরটি এলাকায় পৌঁছালে বাড়িটি শোকের ছায়ায় নিমজ্জিত হয়ে পড়ে। বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন নববধূ। তিনি শুধু কান্নায় বুক ভাসাচ্ছেন। শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় জানাজা শেষে শাকিলকে পারিবারিক গোরস্তানে দাফন করা হয়।

দেওপাড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আকতারুজ্জামান আকতার বলেন, ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক ও বেদনার। শাকিলের পরিবার, নববধূ ও স্বজনদের সান্ত্বনা দেওয়ার কোনো ভাষা নেই।

গোদাগাড়ী থানার ওসি কামরুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি তিনি শুনেছেন। বিষয়টি খুবই মর্মান্তিক। অসাবধানতার কারণেই এ দুর্ঘটনাটি ঘটেছে।