নতুন কাঁঠালের জাত উদ্ভাবন করেছেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের (বারি) বিজ্ঞানীরা। জাতটির নাম দেয়া হয়েছে বারি কাঁঠাল-৬। কাঁঠালের কলম চারা রোপণের মাত্র দেড় বছরে মিলবে ফল। ফল পাওয়া যাবে সারা বছর। থাকবে না আঠাও।
গত জুনে জাতটি অবমুক্ত করেছে কৃষি মন্ত্রণালয়ের জাতীয় বীজ বোর্ড। কৃষি বিজ্ঞানীদের ধারণা এ জাত আবিষ্কারের পর বাণিজ্যিকভাবে জাতীয় ফল কাঁঠাল চাষে নতুন দিগন্তের সূচনা হবে।
গাজীপুরে অবস্থিত বারি’র একদল ফলবিজ্ঞানী কাঁঠালের নতুন জাত বারি কাঁঠাল-৬ উদ্ভাবন করেছেন। এর আগে তারা কাঁঠালের পাঁচটি জাত উদ্ভাবন করেন। সেগুলো হলো বারি কাঁঠাল-১, বারি কাঁঠাল-২, বারি কাঁঠাল-৩, বারি কাঁঠাল-৪ ও বারি কাঁঠাল-৫।
বারি কাঁঠাল-৬ এর উদ্ভাবক বারির ফল বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. জিল্লুর রহমান বলেন, দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে উন্নত আগাম জাতের কাঁঠালের মাতৃজাত সংগ্রহ করে কলম চারা উৎপাদনে প্রথম আমরা সফল হই ২০০৯ সালে। এতে আশার আলো দেখি। পরে ২০১৮ সালে কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে উচ্চ ফলনশীল বারোমাসি কাঁঠালের কলম চারা উৎপাদনে শুরু হয় ব্যাপক গবেষণা। সফলতা আসে ২০২১ সালে। চট্টগ্রামের পাহাড়ি এলাকা রামগড় থেকে ১৫টি চারা সংগ্রহ করে প্রদর্শনী মাঠে রোপণ করে মাত্র দেড় বছরে ফলন পাওয়া ১৩টিতে।
তিনি আরও বলেন, উদ্ভাবিত বারি-৬ জাতটির গাছ বিস্তৃত ডাল-পালা বিশিষ্ট সতেজ ও সবুজ। অধিকাংশ গাছ দেড় বছরের মাথায় ফলন দিতে সক্ষম হলেও দুই বছর পর সব গাছেই ফল আসে। ফলের গড় ওজন ৩.৯৩ কেজি। ফলের উপরের পৃষ্ঠ দেখতে হলুদাভ সবুজ। পাল্প শক্ত, উজ্জ্বল হলুদ বর্ণের ও আঠাবিহীন। এর মিষ্টতা (টিএসএস) ২৪.৮ শতাংশ। গড় ফলন হেক্টরে ১০.৬ টন। জাতটি উৎপাদনের ফলে চারা রোপণের অল্প সময়ে ফলন আসায় কাঁঠাল চাষে বিপ্লব বয়ে আনবে।
বারি মহাপরিচালক ড. দেবাশীষ সরকার বলেন, নতুন জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবনে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট একের পর এক সাফল্য অর্জন করে চলেছে। যার সর্বশেষ অর্জন বারি কাঁঠাল-৬। এটির স্বাদ, মিষ্টতা ও ঘ্রাণ চমৎকার। জাতটি উদ্ভাবনের ফলে দেশে কাঁঠাল চাষে নতুন দিগন্তের সূচনা হবে