পরনের কাপড় বিক্রি করে মেয়ের স্কুলের এসাইনমেন্টের টাকা দিলেন মা

মেয়ের স্কুলের এসাইনমেন্টের টাকা সংগ্রহ করতে নিজের পরিধেয় তিনটি শাড়ি বিক্রি করে টাকা দিয়েছেন মা। বৃহস্পতিবার ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার আঠারবাড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরে বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ছড়িয়ে পড়লে আলোড়ন সৃষ্টি হয়।স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, করোনাকালে বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় বছর শেষে শিক্ষার্থীদের মেধা যাচাই বা গ্রেড নির্ণয় করার

লক্ষ্যে প্রত্যেক বিদ্যালয় থেকে এসাইনমেন্ট দেয়া হচ্ছে। এ অবস্থায় উপজেলার এমসি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থী রিতু আক্তার গত বৃহস্পতিবার এসাইনমেন্ট আনতে গেলে টাকা চান শিক্ষকরা। মেয়ের এসাইনমেন্টের টাকা ব্যবস্থা করতে পরিধেয় কাপড় বিক্রি করে দেন মা।রিতু আক্তার নামের ওই শিক্ষার্থী এলাকার দিনমজুর মো. শহিদ মিয়ার মেয়ে। সে আঠারবাড়ি এমসি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থী।

রিতু আক্তার জানায়, এসাইনমেন্ট দিতে বললে শিক্ষক আনোয়ার হোসেন তিন পাতার প্রশ্ন, দুটি কলম ও এক পাতার সাজেশন দিয়ে ৩৪০ টাকা চান। এ সময় বাবার দেয়া ১০০ টাকার একটি নোট দিলে শিক্ষক আমাকে ধমক দিয়ে তাড়িয়ে দেন। এসময় ৩৪০ টাকাই দিতে হবে, দিতে না পারলে অষ্টম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হতে পারবে না বলে জানান শিক্ষক আনোয়ার।

এ ব্যাপারে মেয়ের মা বলেন, মেয়ে বাড়িতে এসে অনেক কান্নাকাটি করে। তার কান্না সহ্য করতে না পেরে ঘরে থাকা তিনটি পুরনো শাড়ি ৩০০ টাকায় বিক্রি করে টাকা দিয়েছি।এ বিষয়ে এমসি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, এসাইনমেন্টে টাকা লাগে না। কেন ওই শিক্ষক টাকা নিয়েছেন এজন্য কারণ

দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, কেন ওই শিক্ষক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে এসাইনমেন্টের অতিরিক্ত টাকা নিয়েছেন সেজন্য তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। নোটিশের ওপর ভিত্তি ব্যবস্থা নেয়া হবে।