পড়ে যাওয়া ব্যান্ডেজ ট্রলের ব্যাখ্যা দিলেন তারানা হালিম

সম্প্রতি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায় মাথায় ব্যান্ডেজ পরিহিত অবস্থায় বক্তব্য দিচ্ছিলেন এই আওয়ামী লীগ নেত্রী। তবে বক্তব্যের এক পর্যায়ে মাথা থেকে ব্যান্ডেজ পড়ে গেলেও সেখানে কোনোরূপ ক্ষতের দেখা মেলেনি।

আর এর পর থেকেই আওয়ামী লীগের এই নেত্রীকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুরু হয় নানা আলোচনা সমালোচনা। অনেকেই এটিকে রাজনৈতিক ভাবে সাজানো নাটক হিসাবে আখ্যায়িত করেছেন। অনেকেই আবার বিরূপ মন্তব্য করছেন এই আওয়ামী লীগের এই নেত্রীকে নিয়ে।

তবে এই আলোচনার মাঝেই সেদিনের সেই ঘটনার ব্যাখ্যা দিলেন তারানা হালিম। মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) নিজের অফিসিয়াল ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, একজন মানুষ যে কখনো দুর্নীতি করেনি, অন্যের ক্ষতি করেনি,কারো জমি/ঘর দখল করেনি,সন্ত্রাস করেনি-তার একটি চর্মরোগ যে কিছু অদ্ভুত চিন্তাধারী মানুষের এতো নেতিবাচক মাথা ব্যথার কারণ হতে পারে জানতাম না।এখন জেনেছি।সবাইকে নিজের মতো ভাবাও ঠিক না। অনেকে বলেছেন যারা রাজনৈতিক ভাবে এ নিয়ে ট্রল করছেন তাদের ট্রল এর জবাব দেবার, গুরুত্ব দেবার দরকার নেই।

সমস্যা হচ্ছে যারা সত্য পথে থাকার চেষ্টা করেন-তারা অসত্য মানতে পারেন না।তাই ট্রল এর জবাব নয়,অসত্য মেনে না নেবার মানসিকতা থেকে উত্তর দিচ্ছি:

প্রথমত, ব্যাণ্ডেজ কপালে কেন লাগাই: ১৯৯০ থেকে ছাত্র রাজনীতি করি,সেই থেকে আন্দোলন সংগ্রামে রাজপথেই থেকেছি, নানা প্রচারে প্রচণ্ড রোদে রাস্তায় নানা আন্দোলন করেছি।কিন্তু কখনো কোনো সমস্যা হয়নি। গত দুই মাস ধরে লক্ষ্য করছি -রোদে অনেকক্ষণ থাকলে কপালের দুই পাশে কিছুক্ষণ পর খুব চুলকায় এবং কালো প্যাচ হয় ।তাই ডাক্তার বললেন এটা severe স্কিন burn syndrom ,রোদ এড়িয়ে চলতে।বললাম আমি রাজনীতি করি ,রোদ এড়িয়ে চলা সম্ভব না।তিনি বললেন,হয় hat পড়তে, নয়তো রুমাল বেঁধে রোদএ যেতে।

নিজেই ভাবলাম আমরা অন্যের সমালোচনা করতে এত ভালোবাসি যে,hat পরলে লোকে বলবে স্টাইল করে,আর রুমাল বাঁধলে বলবে ঢং করে,তাই নিজ ঘরোয়া একটা টোটকা মাথায় এলো-সব সমালোচনা এড়াতে ব্যাণ্ডেজ এর নীচে টিস্যু দিয়ে কপালে ব্যাণ্ডেজ লাগালাম।

দ্বিতীয়ত, কেন ব্যাণ্ডেজ এর নীচে কোন দাগ ভিডিওতে দেখা গেলো না? ভিডিও টির একটি স্ক্রিন শট নিন ক্রপ করুন -একটু কালো এবং উঁচু অংশ চোখে পড়বে। যারা চোখ থাকতে অন্ধ তাদের অবশ্য চোখে পরবে না।সেদিন একজন যিনি নিজে ডাক্তার তিনি ও ট্রল করলেন -সত্যিকারের ডাক্তার হলে severe sun burn syndrome বিষয়এ তার জানার কথা। না জানলে geogle এ search দিলেও তো জানা যায়।মূলত এলার্জি ও দাগ টি রোদে গেলে ঠিক তখন তখনি হয় না।sunburn এর পরে হয়।ধরুন আমরা কভিড এর সময় মাস্ক পরেছি।যেন কভিড না হয় সেজন্য।এটাকে বলে প্রিভেন্টিভ measure.হবার আগে না হবার ব্যবস্থা নেয়া।

তৃতীয়ত এটা অভিনয় কিনা, আমার বাবা,মা এর মৃত্যুর সময় আমি চিৎকার করে কেঁদেছি,ওটা নিশ্চয় অভিনয় ছিল না ? আমার দুই বার COVID হযেছিল,ওটা নিশ্চয় অভিনয় ছিল না। আমার বোনের ছেলেটার চলে যাবার পর এমনকি এতোদিন পরও যখন ওর ছোটমা কাদে -তাও কি অভিনয়।
মানুষের অসুস্থতাকে যারা অভিনয় মনে করেন তারা কি বলতে পারেন তারা কখনো অসুস্থ হবেন না,হলে তা হবে অভিনয়।এমন যারা বলেন আল্লাহর কাছে যেন তাদের জবাবদিহি করতে হয়।

চতুর্থত,রাজনৈতিক উদ্দেশ্য, একটি অস্বস্তিকর ব্যাণ্ডেজ মাথায় লাগালে যদি রাজনৈতিক ফাযদা লোটা যেত তবে ব্যাণ্ডেজ লাগানো মানুষে দেশ সয়লাব হয়ে যেত। আমি কি কোথাও বলেছি বিএনপি আমার মাথায় আঘাত করেছে ?বলিনি। তবে এর রাজনৈতিক ফায়দা নিলাম কিভাবে?? আসলে যারা নিজেরা এমন তারাই এমনই ভাবে।এ নিয়ে আমি ঐ দিনের আগেও আমার এই পেজ এ পোস্ট দিয়েছি।পড়েছেন কতজন? পড়ার প্রয়োজনও মনে করেননি।আগে জেনে তারপর কমেন্ট করা উচিত।

আল্লাহ সত্যের সহায় হন।অসত্যের শাস্তি বিধান করুন।আমি কারো অমঙ্গল চাই না।তবু বিচারের ভার তাঁর উপরেই দিলাম।সত্যের জয় হোক। আমি যতদিন এ থেকে সুস্থ না হবো রোদে ব্যাণ্ডেজ লাগবো।ঠিক হয়ে গেলে লাগবো না। রোদে ব্যাণ্ডেজ থাকবে,ঘরের ভেতর বা বিকেলে থাকবে না।
আমার ডাক্তার এর পরামর্শ মানবো।
কারো ট্রল করার ইচ্ছা থাকলে করতে থাকুন। আমি ডাক্তার এর পরামর্শ মানতে থাকি এবং কামনা করি মানুষ যেন মানবিক হয়।সব কিছুতেই জটিল কিছু,অসত্য কিছু খোঁজার নোংরা মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসুক।পৃথিবীতে ভালো মানুষ ও আছে কিন্তু।