ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলায় হাসি বেগম (২৪) নামে এক গৃহবধূ নিখোঁজ হওয়ার ১৫ দিন পর মরদেহ উদ্ধার এবং দাফন করার পাঁচদিন পর তাকে জীবিত উদ্ধারের ঘটনা ঘটেছে।সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সদরপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ময়মনসিংহের নান্দাইল থেকে হাসি বেগমকে আটক করে সদরপুর থানায় নিয়ে যান।
এর আগে গত ৭ সেপ্টেম্বর হাসি বেগম নিখোঁজ হন। গত ২০ সেপ্টেম্বর তার পরিবারের তত্ত্বাবধানে শৌলডুবী কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন করা হয়।
হাসি বেগম সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের শৌলডুবী গ্রামের হাবিবুর রহমানের মেয়ে। এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে নানান প্রশ্ন ও চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ৭ সেপ্টেম্বর হাসি বেগম বিদ্যুৎ বিল দেওয়া জন্য সদরপুর যাওয়ার উদ্দেশে বাড়ি বের হওয়ার পর থেকে নিখোঁজ হয়।
এ ঘটনায় হাসির বাবা শেখ হাবিবুর রহমান গত ১১ সেপ্টেম্বর সদরপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। জিডিতে উল্লেখ করা হয় তার মেয়ে হাসি বেগমকে হত্যা করে মরদেহ গুম করেছে জামাতা মোতালেব শেখ (৪৫)। পরে গত ১৪ সেপ্টেম্বর হাসির স্বামী মোতালেব শেখ সদরপুর থানায় পাল্টা একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে উল্লেখ করেন, তার স্ত্রী হাসি বেগম নগদ টাকাসহ প্রায় ১০ লাখ টাকার মালামাল নিয়ে বাবার বাড়িতে পালিয়ে গেছে।
এদিকে গত ২০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ভাঙ্গা উপজেলার মানিকদহ ইউনিয়নের আদমপুর এলাকার নাউটানা এলাকায় কচুরিপানার ভেতর থেকে একটি অর্ধগলিত নারীর মরদেহ উদ্ধার করে ভাঙ্গা থানা পুলিশ। পরবর্তীতে নিখোঁজ হাসি বেগমের মা সালমা বেগম মরদেহের কোমরে একটি তাবিজ ও পায়ের একটি আঙুল ছোট থাকায় নিখোঁজ হাসি বেগমের মরদেহ হিসেবে শনাক্ত করে। সে ভিত্তিতে ময়নাতদন্ত ও আইনি প্রক্রিয়ার পর শৌলডুবী মদিনাতুল কবরস্থানে তার দাফন করা হয়।
অপরদিকে, অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ চলা অবস্থায় গত ২৩ সেপ্টেম্বর হাসি বেগম ফোন করে তার বাবা-মাকে জানায় সে জীবিত আছে। পরবর্তীতে সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সদরপুর থানা পুলিশ হাসি বেগমকে ময়মনসিংহের নান্দাইল থেকে জীবিত উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার মো. গফফার শিকদার বলেন, ‘এর আগে জানতে পারি নিখোঁজের পর হাসি বেগমের মরদেহ পাওয়া গেছে। পরবর্তীতে তার পরিবারের লোকজন হাসির মরদেহ দাফন করে। হঠাৎ আবার জানতে পারলাম হাসি বেগম মারা যায়নি।’
সদরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মামুন আল রশিদ বলেন, ‘হাসি বেগমকে ময়মনসিংহের নান্দাইল এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। বর্তমানে তিনি থানায় আছেন। এখনই এই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানানো সম্ভব নয়। পরবর্তীতে বিস্তারিত জানানো যাবে।’