রংপুরের মিঠাপুকুর উপজে’লা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার সাদাত লিমনের নেতৃত্বে এক ব্যবসায়ীর বাড়িসহ তিনটি দোকান দ’খল ও নগদ অর্থসহ মালামাল লু’টপাটের ঘটনায় মা’মলা দা’য়েরের ২২ দিন পেরিয়ে গেলেও আ’সামিদের কাউকেই গ্রে’ফতার করেনি মিঠাপুকুর থানা পুলিশ। অথচ পুলিশের সামনেই প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা এমনকি থানায় ঘণ্টর পর ঘণ্টা অবস্থান করলেও প্রধান আ’সামি লিমনকে গ্রে’ফতার করছে না বলে অ’ভিযোগ উঠেছে। এদিকে বাড়িঘর দ’খল করে নেওয়ায় পর সর্বস্ব হা’রিয়ে পথে পথে ঘুরছে ভু’ক্তভোগী পরিবার। এক কাপড়েই দিন কাটছে স্বামী, স্ত্রী, স’ন্তান সবার।
মা’মলা সূত্রে জানা গেছে, মিঠাপুকুপুর থানা থেকে মাত্র ৫শ’ গজ দুরে চিথলী দক্ষিণপাড়া গ্রামের মৃ’ত ফয়েজ উদ্দিনের ছেলে ব্যবসায়ী আব্দুল আলীম মিঠু ৮-৯ বছর ধরে স্ত্রী-স’ন্তানদের নিয়ে বসবাস করে আসছেন। বাসার মালিক নাসিম আরা বেগমের কাছ থেকে ৭ শতক জমি কিনে চার রুমের দোকান ও তিন রুম বিশিষ্ট টিনশেড পাকা বাড়ি নির্মাণ করেন। গত ১১ অক্টোবর আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে যাওযার সুযোগে মিঠাপুকুর উপজে’লা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ মো. আনোয়ার সাদাত লিমনের নেতৃত্বে তার ভাই শাহ সাজ্জাদ হোসেন, শাহ নুরুল রওশনসহ ৫০-৬০ জন ক্যাডার লা’ঠি, ছোড়া বল্লম , লো’হার র’ডসহ বিভিন্ন অ’স্ত্রশস্ত্র নিয়ে ঘরের তালা ভে’ঙে বাসাটি দ’খল করে নেয়। তারা বাসায় থাকা আসবাবপত্রসহ বিভিন্ন মালামাল ভাং’চুর করে।
এছাড়া নগদ অর্থ, ল্যাপটপসহ ৫০ লাখ টাকার মালামাল লু’ট করে। খবর পেয়ে বা’দী ও তার স্ত্রী মমতাজ বেগম বা’ধা দিলে তাদের মা’রধর করে। মমতাজ বেগমের পরনের কাপড় ছিঁড়ে তাকে বি’বস্ত্র করে শ্লী’লতাহা’নি করে। আওয়ামী লীগ নেতা লিমন নিজেই লা’ঠি ও লো’হার র’ড নিয়ে হা’মলার নেতৃত্ব দেয়। এ সংক্রান্ত ভিডিওচিত্রও রয়েছে। ব্যবসায়ী আব্দুল আলিম মিঠু ও তার স্ত্রী মমতাজ বেগম জানান, ঘটনার পর ১১ অক্টোবর বিকালে এ ব্যাপারে মা’মলা দা’য়ের করার জন্য মিঠাপুকুর থানার ওসি আমিরুজ্জামানের সঙ্গে দেখা করলে তিনি ‘দেখছি’ বলে বিকাল থেকে সারা রাত ও পরের দিন দুপুর পর্যন্ত থানায় অবস্থান করলেও মা’মলা নেননি। পরে রংপুরের পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমারের সঙ্গে দেখা করে পুরো বি’ষয় জানালে তিনি থানাকে মা’মলা নেওয়ার নির্দেশ দেন। এরপর পুলিশ আ’সামিদের পক্ষ নিয়ে দায়সারা একটি মা’মলা রেকর্ড করে।
মা’মলার বা’দী মিঠু ও তার স্ত্রী মমতাজ আরও জানান, মা’মলা দা’য়েরের পর আ’সামিদের গ্রে’ফতারের জন্য মিঠাপুকুর থানার ওসি আমিরুজ্জামান, ওসি ত’দন্ত জাকির হোসেনের সঙ্গে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করলেও এখন পর্যন্ত আ’সামিদের কাউকেই গ্রে’ফতার করেনি। উল্টো আ’সামিদের পক্ষ নিয়েছে পুলিশ। মা’মলার প্রধান আ’সামি লিমন থানায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা অবস্থান করলেও পুলিশ তাকে গ্রে’ফতার করছে না।
তারা আরও অ’ভিযোগ করেন, আমরা এখন বাস্তহারা হয়ে মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছি। মমতাজ বেগম জানান, আমার বড় ছেলে খালিদ হাসান মান্না মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি ইজ্ঞিনিয়ারিং বিভাগের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী, ছোট ছেলে ওমর ফারুখ মুন্না রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেমিক্যাল অ্যান্ড ফুড প্রসেসিং ইজ্ঞিনিয়ারিং বিভাগের ৪র্থ সেমিস্টারে পড়ছে, একমাত্র কন্যা উম্মে কুলসুম মলি বিএ তৃতীয় বর্ষে পড়ছে। বাড়ি দ’খল করে নেওয়ায় সময় তারা সেখানে থাকা আমাদের প্রায় ৫০ লাখ টাকার মালামাল লু’ট করছে। যদি আমাদের বাড়িঘর ও মালামাল উ’দ্ধার করা না হয় তাহলে তিন স’ন্তানের শিক্ষা জীবন ধংস হয়ে যাবে।
মিঠু আরও জানান, পুলিশ কোনও পদক্ষেপ না নেওয়ায় গত ২৮ অক্টোবর সমস্ত ঘটনা বর্ণনা করে রংপুরের জে’লা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও রংপুর রেঞ্জের পুলিশের ডিআইজির কাছে পৃথক পৃথকভাবে আবেদন করে বিচার দাবি করেছি। তারাও কোনও পদক্ষেপ নেননি। তিনি ও তার স্ত্রী ক্ষো’ভ প্রকাশ করে বলেন, প্রধান আ’সামি স’রকারি দলের প্রভাবশালী নেতা হওয়ায় আমরা বিচার পাচ্ছি না। এখন বা’ধ্য হয়ে আমরণ অ’নশন করা ছাড়া আর কোনও বিকল্প পথ খোলা নেই। এ বি’ষয়ে মিঠাপুকুর উপজে’লা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ মো. আনোয়ার সাদাত লিমনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তার বি’রুদ্ধে আনা অ’ভিযোগ মি’থ্যা। বাড়ি কে দ’খল করেছে জানতে চাইলে বলেন, তার জেঠাতো ভাইয়ের বাসায় তারা ভাড়া থাকতেন। বাসা কিনেছে বলে তার জানা নেই।
লা’ঠি ও অ’স্ত্র হাতে হা’মলার নেতৃত্বদানের ছবি ও ভিডিও সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি। তবে বারবার বলছিলেন, পুলিশের সঙ্গে কথা বলেন তারা সব বলবে। স’রকারি দলের প্রভাবশালী নেতা হয়ে একজনের বাড়ি দ’খলের বি’ষয়টি দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করছে কিনা এমন প্রশ্নেরও কোনও উত্তর দেননি তিনি। মিঠাপুকুর থানার ওসি আমিরুজ্জামানের সঙ্গে যোগাযোগ করে আ’সামিদের কেনও গ্রে’ফতার করা হচ্ছে না জানতে চাইলে তিনি কোনও উত্তর দেননি। আওয়ামী লীগ নেতা লিমনের পক্ষ নেওয়ার বি’ষয়ে বলেন, পুলিশ নিরপেক্ষ আছে। ১৮ ঘণ্টা থানায় অবস্থানের পরও কেনও মা’মলা নেওয়া হয়নি অ’ভিযোগের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি উত্তর না দিয়ে ফোন রেখে দেন।