বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ঢাকায় ঢুকতে দেয়া নিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ফজলে নূর তাপসের বক্তব্যের কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন। তাপসকে উদ্দেশ্য করে উল্টো প্রশ্ন ছুঁড়ে বলেছেন, ঢাকা শহরে ঢুকতে দেয়া না দেয়ার আপনি কে?
বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিকালে রাজধানীর গোপীবাগে আয়োজিত ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আগামীকালের সমাবেশ উপলক্ষে আয়োজিত প্রস্তুতি সভায় ইশরাক হোসেন এ মন্তব্য করেন।
এ সময় তিনি বলেন, ঢাকা শহরই শুধু নয়, এই বাংলাদেশ কারো বাবার দেয়া বা কারো পৈতৃক সম্পত্তি নয়। আর তিনিও পৈত্রিক সম্পত্তির সূত্রে সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের চেয়ারে বসেননি। তার কোন অধিকার নেই আরেকজন নাগরিক সে মহাসচিব হোক আর সাধারণ কোন মানুষ হোক কাউকে ঢাকা শহরে ঢুকতে দেয়া না দেয়ার আপনি কেউই না।
আপনি ঢাকা শহরে ঢুকতে দেয়ার কে বা কে না, সে প্রশ্নে আমি যাব না উল্লেখ করে ইশারাক হোসেন বলেন, ঢাকা শহরে ঢুকতে দেওয়া বা না দেওয়ার আপনি কেউই না। আপনি নিজেকে বড় করার জন্য, না কি কারনে এই বক্তব্য দিয়েছেন সেটি আপনি ভালো জানেন, সেদিকে আমি যাব না। আমি শুধু বলতে চাই, সরকারি ক্ষমতা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর ভাতিজার প্রটোকল ব্যবহার মেয়রের চেয়ারে বসে প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে সুপ্রিমকোর্টে যে বক্তব্য আপনি দিয়েছেন, ক্ষমতা ছাড়ার পর আপনার সে বক্তব্য কোথায় যায় সেটাই দেখা হবে।
ইশরাক হোসেন বলেন, এর আগেও আমাদের বিভাগীয় সমাবেশের সময় তার মামাতো ভাইরা দেখবে বলে হুমকি দিয়েছিল, কিন্তু তাদের আর খুঁজে পাওয়া যায়নি।
বিচারাঙ্গনে সে (তাপস) ত্রাস সৃষ্টি করেছে অভিযোগ ইশরাক হোসেন বলেন, প্রধান বিচারপতিকে দেশত্যাগে বাধ্য করতে সহায়তা করেছে, এই বক্তব্য অতি সম্প্রতি তার কর্মকাণ্ডের অংশ হিসেবে বিচার হবে, আর জনগণ তার যথাযথ বিচার করবে, তার আগের বিডিআর সংক্রান্ত অন্য কিছুতে যাচ্ছি না।
আর ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি আপনি কিভাবে মেয়রের চেয়ারে বসেছিলেন, সে হিসাবও তখন নেয়া হবে।এই মেয়র দায়িত্ব নিয়ে সিটি কর্পোরেশনকে আরো ধ্বংস করেছে উল্লেখ করে তাকে বঙ্গবাজারের মার্কেটের অগ্নিকাণ্ড, নিউমার্কেট এ আগুন, সায়েন্সল্যাবে বিস্ফোরণ, বংশালের বিস্ফোরণ কারিগর হিসেবে অভিযোগ করেন।
বলেন, আজকে বাংলদেশের সব সমস্যার মূল সমস্যা হলো একটা অবৈধ, অনির্বাচিত, অগণতান্ত্রিক ও ফ্যাসিস্ট সরকার রাষ্ট্রপরিচালনা করছে এবং সে তার পরিবারের লোকজন দিয়ে এসব নিয়ন্ত্রণ করছে। এ অবস্থায় শুধু তারাই আর তাদের অনুসারী কিছু মাফিয়াতন্ত্রের অনুসারী ব্যবসায়ীরাই ভালো আছে উল্লেখ করে বলেন, এদের বিরুদ্ধে দুর্বার কঠিন আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে এবং সেই আন্দোলনে আমাদের যা যা করণীয় তাই করতে হবে।
বিএনপির এই আন্দোলনকে উদ্দেশ্য করে ইশরাক হোসেন বলেন, আমাদের এই আন্দোলন মুক্তিযুদ্ধের চেয়েও কম কিছু নয়। একাত্তর সালে মানুষ মুক্তিযুদ্ধ করেছিল সেটাও ছিল আজকের মতোই রাজনৈতিক আন্দোলনের প্রেক্ষাপট।
ইশরাক হোসেন বলেন, আজকে আমরা একটি অবৈধ রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছি, আমাদের হাতে কোন অস্ত্র নেই, কিন্তু তারা (আওয়ামী লীগ) রাষ্ট্রের সকল যন্ত্র ব্যবহার করছে। পুলিশকে ব্যবহার করছে। সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করছে বিচার বিভাগকে। তাই এদের সাথে আর কোন আলোচনার প্রয়োজন নাই। আমি মনে করি, আমাদের এদের সাথে আর কোন আলাপ আলোচনা নেই, যে পথে গেলে তাদের এই অবৈধ ক্ষমতার মসনদ থেকে নামানো যাবে আমরা এখন সে পথেই যাবো।