জনপ্রিয় নাট্যকার-অভিনেতা বৃন্দাবন দাস ও অভিনেত্রী শাহানাজ খুশি দম্পতি বিয়ে করেছিলেন ১৯৯৪ সালের ১৯ জানুয়ারি। তার আগে তারা চুটিয়ে প্রেম করেছেন প্রায় ৯ বছর। তারা যখন একে অন্যকে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন, তখন আর্থিকভাবে অসচ্ছ্বল ছিলেন।
নাটক নিয়ে কথা বলতে গিয়ে প্রসঙ্গক্রমে চ্যানেল আই অনলাইনের কাছে এমনই ব্যক্তিগত গল্প বলেন বৃন্দাবন দাস। তিনি বলেন, খুশির বড়ভাই ছিল আমার বন্ধু। আমার মাস্টার্স পরীক্ষার শেষ দিনে খুশিকে গোপনে বিয়ে করি রাতের বেলা। পরের দিন আমার ভাইভা পরীক্ষা ছিল। সেসময় আমার পকেটে ছিল মাত্র ১৮ টাকা!
তিনি বলেন, আমি কখনও পিছনে তাকাই না। ১৮ টাকা পকেটে নিয়ে বিয়ে করাটা এখন আমার কাছে শুধু সাহস মনে হয়না, দুঃসাহস মনে হয়! এটা এখন মনে পড়লে বুঝিনা কীভাবে এটা করেছি। তারুণ্যের শক্তি বোধ হয় এটাই, ভালোবাসার শক্তি এটাই। বিয়ের পরের চার মাস থেকেছি থিয়েটার দলের এক বড় ভাইয়ের বাসায়।
তারাই আমাদের দুজনকে সাপোর্ট দিয়েছিল। তারপর আমি ২ হাজার টাকার মাইনাতে একটা চাকরি পাই। কিন্তু তখন আমার ঘর ভাড়া ছিলো ১৪০০’শ টাকা। অনেক কষ্টে আমাদের চলতে হতো। তখন মনে হতো, কি আর হবে! কিছু না করতে পারলে দুজনে একসঙ্গে তো মরতে পারবো! এই কথা ভেবেই আমরা একসঙ্গে থেকেছি।
এরমধ্যে আমাদের মধ্যে অনেক সমস্যা হয়েছে। কয়েকবার সামাজিক বিভিন্ন বাঁধার কারণে মনে হয়েছিল আমরা আলাদা থাকি। কিন্তু পারিনি।দু’জনেই আলোচনা করে আলাদা থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। কিন্তু দুতিন মাস পর আবার যা তাই! আমরা একে অন্যকে ছেড়ে আলাদা থাকতে পারিনি। এত কিছুর পরেও আমরা কখনও কাউকে কোনো বিষয়ে দোষারোপ করিনি। জীবনে এত স্ট্রাগল করেছি যে আমরা কারো দিকে তাকাইনি। ভোরে আজান দিলে কাজে বেরিয়ে পড়তাম, পরদিন ভোরে ঘরে ফিরতাম। এভাবে আমাদের অনেকদিন কেটে গেছে।
শাহানাজ খুশি অনেকটা আবেগতাড়িত হয়ে বলেন, আমাদের বিয়ের কোন ছবি নেই। যদি কেউ তুলে থাকে সেটা আমদের সংগ্রহে নেই। গ্লাস ভেঙে পথে ছড়িয়ে দিলে হাঁটতে যে অবস্থা হয়, আমাদের এমন জীবন কেটেছে প্রায় ১০ বছর। এখন আমরা ভালো আছি। কিন্তু যে স্বপ্ন নিয়ে আমরা সংসার শুরু করেছিলাম, সেই স্বপ্নের বইটা আজও খোলা হয়নি।আমাদের জীবনের গোল্ডেন পিরিয়ডটা কেটেছে সংসারের মধ্যে দিয়ে। সে যত ব্যস্ত থাকতো আমি মনে করতাম আমার জন্য ছুটছে। আমি ওকে থামিয়ে দিলে সব বিফলে যাবে। আমি সবকিছু ছেড়ে এসেও ওর হাত ছাড়িনি।