কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দুই নেতাকে শাহবাগ থানায় নিয়ে পেটানোর অভিযোগ

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দুই নেতাকে রাজধানীর শাহবাগ থানায় নিয়ে নির্মমভাবে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাতে এ ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। আহতরা হলেন- ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও ফজলুল হক হলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন নাঈম এবং ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাবির শহীদুল্লাহ হলের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদ মুনিম।

তাদেরকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনার জেরে রাতে শাহবাগ থানার সামনে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ভিড় করেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও পুলিশের কর্মকর্তারা থানায় গিয়ে মধ্যরাতে ঘটনা মিমাংসা করেন।

পরিবার ও ছাত্রলীগ সূত্র জানায়, পুলিশের রমনা বিভাগের এডিসি হারুন অর রশিদ তাদেরকে থানায় নিয়ে বেদমভাবে পিটিয়েছেন। ছাত্রলীগের নেতা পরিচয় দেওয়ার পরেও হারুনের সঙ্গে ১০-১৫ জন পুলিশ সদস্য মিলে তাদেরকে পেটান। এরমধ্যে নাঈমের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তার মুখমণ্ডল মারত্মকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে।

সূত্র জানায়, এডিসি হারুন শনিবার রাতে আরেক নারী পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে বারডেম হাসপাতালে আড্ডা দিচ্ছিলেন। ওই সময় নারী কর্মকর্তার স্বামী কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দুই নেতাকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে যান। নারী কর্মকর্তার স্বামীও একজন সরকারি কর্মকর্তা। তার সঙ্গে এডিসি হারুনের বাক-বিতণ্ডা হয়।

এ ঘটনার পর ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। ছাত্রলীগের সাবেক উপ-দপ্তর সম্পাদক মাহমুদ আবদুল্লাহ বিন মুন্সি লিখেছেন, ‘এডিসি হারুনের বিচার না হলে যেই শাহবাগে আমার ছাত্রলীগের দুই ছোট ভাইকে নির্মমভাবে নির্যাতন করা হইছে। সেই শাহবাগ অবরোধ হোক!’

আরেক কেন্দ্রীয় নেতা তানিম খান লিখেছেন, ‘যেখানে কেন্দ্রীয় নেতাদের নিরাপত্তা নাই, সেখানে তৃণমূলের কি হবে? এ লজ্জা কার!!!’ ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেত্রী ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য রুশী চৌধুরী লিখেছেন, ‘আজ এটা কি হলো !! আহারে ছাত্রলীগ !!’

আহত নাঈমের ছবি শেয়ার করে ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি ইয়াজ আল রিয়াদ লিখেছেন, ‘আমার ছাত্রলীগের ছোট ভাই। কেন এমন হলো, কি জন্য এমন হলো জানতে চাই। এটা কি মেনে নেওয়ার মতো ঘটনা!!’ কেন্দ্রীয় নেতা সোলায়মান ইসলাম লিখেছেন, ‘পুলিশের পরকীয়ার জেরে রক্তাক্ত আমার ছাত্রলীগ।’

আহত নাঈমের ছবি শেয়ার করে ছাত্রলীগ নেতা তোফায়েল আহমেদ তপু লিখেছেন, ‘গায়ে পরিহিত উর্দিটার অপব্যবহার করে একজন মানুষকে এভাবে প্রহার করা হবে, এমনটা সহ্য করা যায় না। তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানাই। বন্ধু নাইম এবং ছোট ভাই মুনিমকে যে বা যারা সুপরিকল্পিত ভাবে আঘাত করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় আইন সম্পাদক তৌহিদ বনী লিখেছেন, ‘এতিমদের সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ!’

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে এডিসি হারুনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

জানতে চাইলে ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, ‘ঘটনাটি শুনেছি। অভিযোগ আমলে নেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’