কিশোরীকে ২ মাস আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগে কনস্টেবলসহ গ্রেপ্তার ২

বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ঠাকুরগাঁওয়ে কিশোরীকে দুই মাস আটকে রাখে পুলিশ কনস্টেবল আল-আমিন (২৮) ও তার বন্ধু রবিউল (৩২)। এ সময় ওই কিশোরী নির্যাতন ও ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন আল-আমিন ও তার বন্ধুর বিরুদ্ধে।

ভুক্তভোগী কিশোরী ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী। কনস্টেবল আল-আমিন ঠাকুরগাঁও পুলিশ লাইনে সংযুক্ত রয়েছেন। তিনি পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার ডাবরডাঙ্গা এলাকার তৈবুর রহমানে ছেলে। রবিউল ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে টেলি মেডিসিন পদে চাকরি করেন। তিনি ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা রায়পুর ইউনিয়নের আব্দুল কাশেমের ছেলে বলে তথ্য পাওয়া যায়।

গত রোববার রাত ১২টায় কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে আল আমিনকে ১ নম্বর ও রবিউলকে ২ নম্বর আসামি করে ঠাকুরগাঁও সদর থানায় একটি অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এর আগে ওই দিন দুপুরে শহরের হাজিপাড়া এলাকা থেকে ভুক্তভোগী কিশোরীকে (১৮) উদ্ধার করে ঠাকুরগাঁও সদর থানা পুলিশ। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে রবিউলকে এবং পরে আল আমিনকে আটক করা হয়। সোমবার সন্ধ্যায় অভিযোগটি মামলা হিসেবে রুজু হয় এবং পুলিশ সদস্য আল আমিন ও রবিউলকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

ভুক্তভোগী কিশোরী বলেন, আল-আমিন আমাকে প্রথমে প্রেমের ফাদে ফেলে। আমাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে কক্সবাজার নিয়ে যায়। সেখানে পাঁচদিন রেখে জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে। কক্সবাজার থেকে এসেই জানতে পারি সে বিবাহিত। তার একটি সন্তানও রয়েছে। আমি আমার বাসায় ফিরে যেতে চাই। বার বার তাকে অনুরোধ করি। কিন্তু আল-আমিন ও রবিউল আমাকে আটকে রাখে। দুই মাস পর্যন্ত আমাকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন স্থানে রেখে নির্যাতন করেছে, ধর্ষণ করেছে।

ভুক্তভোগী কিশোরীর বাবা বলেন, আল-আমিন ও রবিউল আমার মেয়েকে ফাঁদে ফেলেছে। তাদের পরামর্শে মাস তিনেক আগে হঠাৎ একদিন আমার মেয়ে বাসার অনেক টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। আমরা অনেক খোঁজাখুঁজির পরও তার কোনো সন্ধান পাচ্ছিলাম না। এখন জানতে পারছি এত কিছু হয়েছে। প্রায় তিন মাস পর পুলিশের সহায়তায় মেয়েকে উদ্ধার করতে পেরেছি। আমি এই অন্যায় ও জুলুমের বিচার চাই।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ঠাকুরগাঁও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ কবির বলেন, রোববার দুপুর ১২টার সময় একটি মহিলা মেস থেকে কিশোরীকে উদ্ধার করা হয়েছে। কিশোরী মেয়েটি পুলিশি হেফাজতে রয়েছে। দোষী যেই হোক, তার বিরুদ্ধে যথাযথ পুলিশি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।