এবার চীনের সর`কারি টিভিতে মহানবী (সা.)-কে অব`মাননা

সম্প্রতি ফ্রান্সে মহানবী (স.)-কে অবমাননার ঘটনা নিয়ে গোটা মুসলিম দুনিয়া উত্তাল। প্রত্যেক মুসলিম দেশ থেকে আসছে জোরালো প্রতিবার। বহু দেশ ফ্রান্সের পণ্য বয়কট করে প্রতিবাদ জানিয়েছে। এই উত্তেজনার মধ্যেই চীন সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন চীনা সেন্ট্রাল টেলিশিন নেটওয়ার্ক (সিসিটিভি) সম্প্রচার করলো মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স.)-এর বিতর্কিত ব্যঙ্গচিত্র। ভিডিওতে প্রকা`শিত চিত্রটি ইতি`মধ্যেই সামাজিক গণমাধ্যমে বিতর্কের ঝড় তুলেছে।

উইঘুরদের অধিকার নিয়ে কর্মরত আর্সালান হিদায়াত টুইটারে জানান, তাং রাজবংশের আম`লের আরব রাজদূতের চীন পরিভ্রজনের দৃশ্য একটি হাতে আকা ছবি তুলে ধরে সিসি`টিভি। সেই ছবিতে আরবের রাজদূত চীনা সম্রাটকে মহানবী (স.)-এর হাতে আঁকা ছবি উপহার দিচ্ছেন সেখানে দেখানো হয়। চীনের সরকারি টেলিভিশন ক্যারোল অব ঝেঙ্গুয়ান নামে ধারাবাহিকভাবে সস্প্রচারিত টিভি শোতে এই ছবি উপস্থাপন করে।

আর্সালন জানান, চীনা টেলিভিশনের শো-তে ছবিটি দেখিয়ে আরবের রাজদূতের মুখ দিয়ে বলানো হয়েছে, ইনিই আমাদের দেশের সৃষ্টিকর্তা, মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)। আর এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই গোটা মুসলিম দুনিয়া এখন প্রশ্ন চিহ্নের সামনে এসে দাঁড়িয়েছে। কারণ ইতিমধ্যেই এক ফরাসি শিক্ষকের আঁকা ছবির জেরে ফ্রান্সকে তারা বয়কট করেছেন। অথচ, চীন সরকারিভাবেই মুসলিম দুনিয়াকে আঘাত করেছে। অবমাননা করেছে ইসলাম ধর্মের। ফলে তাদের ভূমিকা এখন সন্দেহজনক লাগছে অনেকের কাছেই।

এতো বড় ঘটনার পরও সিসিটিভি কর্তৃপক্ষ বা চীন সরকারের বিন্দুমাত্র অনুশোচনা নেই। কেউই প্রকাশ্যে দুঃখপ্রকাশও করেননি। এমনকী, সামাজিক গণমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় বইলেও তারা কেউ ঘটনার কথা অস্বীকারও করেননি। ছবিটি এখনও ঘুরছে গণমাধ্যমে। মহানবী (সা.)-এর ছবি প্রকাশ করে বিন্দুমাত্র অনুতপ্তও নয় চীন।

উল্লেখ্য, এর আগে শ্রেণিকক্ষে মহানবীর (সা.) ব্যাঙ্গচিত্র দেখানোর জেরে এক ফরাসি শিক্ষক স্যামুয়েল প্যাটিকে হত্যা করা হয়। তাকে সম্মান জানাতে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে দেশ ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেন, ইসলাম ধর্ম ও বিশ্বনবী হযরত মোহাম্মদকে (সা.) নিয়ে ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন বন্ধ করা হবে না। এরপরই ফ্রান্সের মুসলিমরা ম্যাক্রোঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন, তাদের ধর্মকে দমন করা ও ইসলাম ফোবিয়াকে বৈধতা দিতে চেষ্টা করছেন তিনি।

ম্যাঁক্রোর এমন বিতর্কিত মন্তব্যের পরই তুরস্ক এবং পাকিস্তানসহ বেশ কয়েকটি আরব দেশ নিন্দা জানিয়েছে। তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোগান বলেছেন, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের মানসিক চিকিৎসা দরকার।এদিকে, মুসলিম বিশ্ব থেকে ফরাসি পণ্য বয়কটের ডাক এসেছে। এর মাঝে তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোগান ফ্রান্সের পণ্য বয়কটের আহ্বান জানান। শুধু আরবরাই নয়, পুরো মুসলিম বিশ্বেই ফরাসি পণ্য বয়কটের হিড়িক পড়ে গেছে। দোকান থেকে ফরাসি পণ্য সরিয়ে ফেলছে অনেক খ্যাতনামা চেইন শপসহ বহু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।করোনা মহামারিকালে এই বয়কটের সুদূরপ্রসারী প্রভাব আঁচ করতে পেরে আরব দেশগুলোর প্রতি পণ্য বয়কট বন্ধের অনুরোধ জানিয়েছে ফ্রান্স।