আমি আকবরকে একবার ছুঁয়ে দেখতে চাই : রায়হানের মা

সিলেট নগরের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁ’ড়িতে ‘নি’র্যাতনে’ রায়হান আহমদ নি’হতের ঘটনায় প্রধান অ’ভিযুক্ত পুলিশের বহিস্কৃত উপ পরিদর্শক আকবর হোসেন ভূইয়াকে স্থানীয়দের সহযোগিতায় গ্রে’ফতার করা হয় বলে জানিয়েছেন সিলেটের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন। সোমবার (৯ নভেম্বর) সকালে সিলেটের কানাইঘাট উপজে’লার লক্ষীপ্রসাদ ইউনিয়নের ডোনা সীমান্ত থেকে আকবরকে গ্রে’ফতারের কথা জানায় পুলিশ।

আকবর গ্রে’ফতার হওয়ার পর সন্তোষ প্রকাশ করেছেন নি’হত রায়হানের মা সালমা বেগম। এস আই আকবরকে গ্রে’ফতার করার পর আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন। এ সময় সাংবাদিকদের বলেন, ‘একবার আকবরকে আমি ছুঁয়ে দেখতে চাই। এর কারণ আকবর মানুষ কিনা- সেটি আমি পরীক্ষা করতে চাই। কোনো মানুষ এভাবে কোনো মানুষকে পি’টিয়ে হ’ত্যা করতে পারে না।’ রায়হানের মা জানান, ‘এস আই আকবরকে গ্রে’ফতার করায় তিনি সন্তুষ্ট। কিন্তু তার বিচার প্রকাশ্য জনগণের সামনে সিলেটের কোর্ট পয়েন্টে করতে হবে। তাকে ফাঁ’সিতে ঝুলাতে হবে। তবেই রায়হানের আত্মা শান্তি পাবে।

তিনি বলেন, আকবরকে পা’লিয়ে যেতে সহায়তা করেছেন এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। সেটি আকবর বলেছে। ওই পুলিশ কর্মকর্তাসহ আকবরকে সহায়তাকারী সাংবাদিক নোমানের শা’স্তি দাবি করেন তিনি। বলেন, যারা অ’পরাধীকে পা’লিয়ে যেতে সহযোগিতা করেছে তারাও সমান অ’পরাধী।উল্লেখ্য, গত ১১ অক্টোবর বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁ’ড়িতে নি’র্যাতন করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে রায়হানের মৃ’ত্যু হয়। রায়হান

সিলেট নগরের আখালিয়ার নেহারিপাড়ার বিডিআরের হাবিলদার মৃ’ত রফিকুল ইসলামের ছেলে। তিনি নগরের রিকাবিবাজার স্টেডিয়াম মার্কে’টে এক চিকিৎসকের চেম্বারে চাকরি করতেন। এ ঘটনায় গত ১২ অক্টোবর রাতে অ’জ্ঞাতনামাদের আ’সামি করে পুলিশি হেফাজতে মৃ’ত্যু আইনে নগরীর কোতোয়ালি মডেল থানায় মা’মলা করেন রায়হানের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নি।

১৪ অক্টোবর মা’মলাটি পুলিশ সদর দফতরের নির্দেশ পিবিআইতে স্থানান্তর হয়। ত’দন্তভার পাওয়ার পর পিবিআইর টিম ঘটনাস্থল বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁ’ড়ি, নগরের কাস্টঘর, নি’হতের বাড়ি পরিদর্শন করে। সর্বোপরি ম’রদেহ কবর থেকে তোলার পর পুনরায় ম’য়নাত’দন্ত করা হয়। নি’হত রায়হানের ম’রদেহে ১১১টি আ’ঘাতের চিহ্ন উঠে এসেছে ম’য়নাত’দন্ত প্রতিবেদনে। এসব আ’ঘাতের ৯৭টি ফোলা আ’ঘাত ও ১৪টি ছিল গু’রুতর জ’খমের চিহ্ন। এসব আ’ঘাতগুলো লা’ঠি দ্বারাই করা হয়েছে। অসংখ্য আ’ঘাতের কারণে হাইপোভলিউমিক শক ও নিউরোজেনিক শকে মস্তিষ্ক, হৃৎপিণ্ড, ফুসফুস, কিডনিসহ গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলো কর্মক্ষমতা হা’রানোর কারণে রায়হানের মৃ’ত্যু হয়েছে।

এ ঘটনায় গত ২০ অক্টোবর দুপুরে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁ’ড়িতে নি’র্যাতনে রায়হান আহমদ হ’ত্যা মা’মলায় ওই ফাঁ’ড়ির কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাসকে ও ২৩ অক্টোবর কনস্টেবল হারুনুর রশিদকে গ্রে’ফতারের পর পাঁচদিনের রি’মান্ডে নেয়া হয়। রোববার (২৫ অক্টোবর) কনস্টেবল টিটুকে ফের তিনদিনের রি’মান্ডে নেয় পিবিআই।ঘটনার দিন বিকেলে মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে একটি ত’দন্ত কমিটি গঠন করা হলে রায়হানকে ফাঁ’ড়িতে এনে নি’র্যাতনের প্রাথমিক প্রমাণ পায় কমিটি। ত’দন্ত কমিটির সুপারিশে বন্দরবাজার ফাঁ’ড়ির ই’নচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূইয়া, কনস্টেবল হারুনুর রশিদ, তৌহিদ মিয়া ও টিটু চন্দ্র দাসকে সাময়িক বরখাস্ত এবং এএসআই আশেক এলাহী, এএসআই কুতুব আলী ও কনস্টেবল সজিব হোসেনকে প্রত্যাহার করে তাদের পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়। এছাড়া গত ২১ অক্টোবর এ ঘটনায় প্রধান অ’ভিযুক্ত এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াকে ফাঁড়ি হতে পালাতে সহায়তা করা ও তথ্য গো’পনের অ’পরাধে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির টু আইসি এসআই হাসান উদ্দিনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।