অবশেষে সেই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা

জাল সনদে চাকরি নেওয়ার অভিযোগে নওগাঁর মান্দা আদর্শ মহিলা স্কুল এণ্ড কলেজের শরীরচর্চা শিক্ষক পাপিয়া খানের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন কলেজের অধ্যক্ষ মো. আলমগীর হোসেন। মামলা নং-১৮/২০২০ জি আর নং ৫৩৫/২০২০ ধারা ৪০৬,৪২০,৪৬৮ ও ৪৭১।জানা যায়, মান্দা থানা আদর্শ স্কুল এণ্ড কলেজের শরীরচর্চা বিষয়ের শিক্ষক পাপিয়া খান জাল শিক্ষক নিবন্ধের সনদ দিয়ে ২০১০ খ্রিষ্টাব্দের ৫ আগস্ট নিয়োগ নেন। সে বছর সেপ্টেম্বর মাসে তিনি এমপিওভুক্ত হন। এ সময়ে এমপিও বাবদ অবৈধভাবে সরকারি কোষাগার থেকে প্রায় ১৭ লাখ টাকা আত্নসাৎ করেছেন।প্রতিষ্ঠানের সাথে সংশ্লিষ্ট কয়েকটি সূত্র জানায়, সম্প্রতি পাপিয়ার এমপিওভুক্তির ১০ বছর পূর্ণ হয়েছে। তাই উচ্চতর স্কেল নেয়ার জন্য প্রক্রিয়া শুরু করেছিলেন। কিন্তু পাপিয়ার শিক্ষক নিবন্ধন সনদ নিয়ে সন্দেহ দেখা দিলে গত ৩০ আগস্ট প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ এনটিআরসিএতে সনদটি যাচাইয়ের জন্য পাঠান।

গত ১৬ সেপ্টেম্বর শরীরচর্চা শিক্ষক পাপিয়া খানের শিক্ষক নিবন্ধন সনদটি জাল বলে ১ম দফায় যাচাই প্রতিবেদন দেয় বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যায়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। এরপর জাল সনদের ওপর একজন কর্মকর্তার জাল স্বাক্ষর ও ভুয়া সিল দিয়ে শিক্ষক পাপিয়া তার সনদটি বৈধ করার অপচেষ্টা চালান।প্রতিষ্ঠান প্রধানকে দেয়া এক লিখিত আবেদনে পাপিয়া দাবি করেন, তার সনদটি ভেরিফাই করে দিয়েছেন এনটিআরসিএর এক কর্মকর্তা। এনটিআরসিএর সহকারী পরিচালক তাজুল ইসলামের ভুয়া সিল ও স্বাক্ষর দিয়ে জাল সনদরে একটি কপি ভ্যারিফাইড বলে প্রতিষ্ঠান প্রধানকে জামা দেন।

এ প্রসঙ্গে সহকারী পরিচালক তাজুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার স্বাক্ষরটি জাল করা হয়েছে বলে জানান।তিনি বলেন, এভাবে ফটোকপির ওপর সিল দিয়ে এনটিআরসিএ কখনই নিবন্ধন সনদ ভেরিফাই করে না। সনদ যাচাইয়ের ক্ষেত্রে ভুলও হয়না। যদিও ভুল হয় সে ক্ষেত্রে একই স্মারকে প্রতিস্থাপিত সনদ যাচাই প্রতিবেদন দেয়া হয় এবং তা ওয়েবসাইটে প্রদর্শন করা হয়। এখানে তিনি ভুয়া সিল ও জালস্বাক্ষর ব্যবহার করেছেন।তিনি আরও জানান, সারাদশের জাল সনদধারী শিক্ষকরা বেপরেোয়া হয়ে উঠেছে। তারা সনদ বৈধ করতে প্রায়ই কর্মকর্তাদের স্বাক্ষর জাল করছেন বলে আমরা জানতে পেরেছি।

মান্দা থানা আদর্শ মহিলা বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ মো. আলমগীর হোসেন জানান, প্রথমে শরীরচর্চা শিক্ষক পাপিয়া খানের নিবন্ধন সনদ ভুয়া সংক্রান্ত বিষয়টি এনটিআরসিএ থেকে ১৬ সেপ্টেম্বর পাঠানো যাচাই রিপোর্টের মাধ্যমে নিশ্চিত হই। তারপর ঐ শিক্ষক গত ২৮ সেপ্টেম্বর এনটিআরসিএর সহকারী পরিচালক তাজুল ইসলাম স্যারের স্বাক্ষরিত নিবন্ধন সনদ আমার অফিসে জমা দেন এবং বলেন তাজুল ইসলাম স্যার আমার সনদটি যাচাই করে সঠিক বলে সনদে স্বাক্ষর করে দিয়েছেন।

সেই সনদটি সঠিক নয় বলে আমার সন্দেহ হলে আমি এনটিসআরসিএকে সনদটি আবার যাচাইয়ের আবেদন করি। তার প্রেক্ষিতে গত ৮ অক্টোবর আবারও কর্তৃপক্ষ সনদটি সঠিক নয় বলে জানান। একইসাথে মামলা দায়ের করতে বলেছেন। জাল নিবন্ধন সনদধারী শিক্ষক পাপিয়া খানের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।মান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহিনুর রহমান বলেন, মান্দা আদর্শ মহিলা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ মো. আলমগীর হোসেন অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন।