১৫ বছর বয়সে ঘরছাড়া, হাতে ছিল ৩০০ টাকা, এখন তাঁর কোম্পানির টার্নওভার সাড়ে ৭ কোটি টাকা!

রোজকার পারিবারিক অশান্তি মেনে নিতে না পেরে বাড়ি ছেড়েছিলেন মাত্র ১৫ বছর বয়সে। সঙ্গী বলতে একজোড়া জুতো, দু’জোড়া জামা, নগদ ৩০০ টাকা আর অদম্য জেদ। বাড়ি ছাড়ার সাহস কে জুগিয়েছিল? এই উত্তর আজও তাঁর অজানা।অজানা সাহস আর অদম্য জেদে ভর করেই ৩০০ টাকাকে কোটি টাকায় পরিণত করেছেন তিনি। নিজের জুয়েলারি ব্যবসায় আজ তিনি কয়েক কোটি টাকার মালিক।

তিনি চিনু কালা। রুবানস অ্যাকসেসরিজের মালিক। ১৯৮১ সালে ১০ অক্টোবর রাজস্থানে জন্ম তাঁর। প্রথাগত শিক্ষার সুযোগ তিনি পাননি। বাস্তব অভিজ্ঞতাই তাঁর শেখার মূল প্রেরণা।১৫ বছরের সেই অসহায় মেয়ে থেকে চিনু কালা হয়ে ওঠার জার্নিটা সহজ ছিল না তাঁর। প্রথম দু’দিন খুব ভয়ে কেটেছে। রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে দিন কাটিয়েছিলেন। তারপর একটা আশ্রয়ের সন্ধান পান।

প্রতি রাতে ২০ টাকার বিনিময়ে একটি ডর্মিটরিতে তিনি থাকার ব্যবস্থা করে ফেলেন। কয়েক দিনের মধ্যে একটা কাজও জুটিয়ে নিলেন। দরজার দরজায় ঘুরে ছুরির সেট, কোস্টার ইত্যাদি বিক্রি করার কাজ।৬১১chinuসারাদিন ঘুরে কয়েকটাই মাত্র বিক্রি করতে পারতেন। কোনওদিন ২০ টাকা, কোনওদিন ৬০ টাকা উপার্জন হত তাঁর।

বেশিরভাগ বাড়িতেই তাঁর মুখের উপর দরজা বন্ধ করে দেওয়া হত। এ সব নিয়ে প্রথম প্রথম খুব ভেঙেও পড়তেন তিনি। তবে হাল ছাড়েননি। মাত্র এক বছরের মধ্যে তিনিই আবার এই পেশায় এতটাই দক্ষ হয়ে ওঠেন যে, তাঁকে ওই সেলস কোম্পানি সুপারভাইজারের পদে উত্তীর্ণ করে।নানা রকমের কাজ করেছেন চিনু। রেস্তরাঁয় ওয়েট্রেস-এর কাজও করেছেন। এমন দিনও গিয়েছে তাঁর যখন সারাদিন সেলস-এর কাজ করার পর সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত রেস্তরাঁয় খাবার পরিবেশন করে উপার্জন করেছেন। উপার্জন করেছেন মডেলিং থেকেও।

২০০৪ সালে বেঙ্গালুরুর বাসিন্দা অমিত কালার সঙ্গে বিয়ে হয়। তাঁদের একটি মেয়ে রয়েছে। তাঁর জীবনে টার্নিং পয়েন্ট আসে ২০০৮ সালে। বন্ধুদের কথা মেনে মিসেস ইন্ডিয়া প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন চিনু। প্রতিযোগিতার ফাইনালেও পৌঁছন। কিন্তু ইংরাজিতে ঠিক মতো উত্তর দিতে না পারায় প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে গিয়েছিলেন।১

তারপরই তাঁর মডেলিংয়ে আসা। মডেলিংয়ে আসার পরই ফ্যাশন জুয়েলারিতে আগ্রহ জন্মায় চিনুর। তত দিনে আর্থিক ভাবে অনেকটা সাবলীল হয়ে উঠেছিলেন। ফলে এ বার চিনু নিজের ব্যবসা শুরু করার পরিকল্পনা করে ফেলেন।২০১৪ সালে শুরু করে দেন অনলাইন জুয়েলারি ব্যবসা। নাম দেন রুবানস অ্যাকসেসরিজ। অনলাইনের পাশাপাশি বেঙ্গালুরুর ফোরাম মলেও রুবান অ্যাকসেসরিজের আউটলেট রয়েছে। ৩০০ টাকায় জীবন শুরু করা চিনুর কোম্পানির টার্নওভার এখন সাড়ে ৭ কোটি টাকা।