স্বামীর দেওয়া আগুনে দগ্ধ সাদিয়াকে বাঁচানো গেল না

কুমিল্লার দেবিদ্বারে যৌতুকের দাবিতে স্বামীর দেওয়া আগুনে দগ্ধ হয়ে আটদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর গৃহবধূ সাদিয়া মারা গেছেন। শনিবার (৩০ এপ্রিল) ভোর সাড়ে ৪টার দিকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আইসিইউতে তিনি মারা যান। দেবিদ্বার থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, বিভিন্ন মাধ্যম থেকে শুনেছি সাদিয়া মারা গেছেন।

এ ঘটনায় আগের মামলার সঙ্গে পরিবার আরেকটি হত্যা মামলা যোগ করতে পারবে। গত বুধবার (২৭) রাতে অভিযান পরিচালনা করে অভিযুক্ত স্বামী আসাদ সরকারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি এখন পর্যন্ত ঘটনার বিষয়ে মুখ খোলেননি। আমরা তাকে আদালতের মাধ্যমের কারাগারে পাঠিয়েছি। পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।অভিযুক্ত আসাদ সরকার গুনাইঘর গ্রামের নুরু সরকারের ছেলে। নিহত সাদিয়া একই উপজেলার পদ্মকোট গ্রামের মো. অপুল সরকারের মেয়ে।

নিহত সাদিয়ার ভাই খাইরুল বলেন, ডাক্তাররা আপ্রাণ চেষ্টা করেও আমার বোনকে বাঁচাতে পারেননি। সে মৃত্যুর আগে ভিডিও বার্তায় তার স্বামীকে অভিযুক্ত করে জবানবন্দি দিয়েছে। আশা করি তার স্বামীর কঠোর শাস্তি হবে। বর্তমানে সাদিয়ার মরদেহ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। সন্ধ্যায় কুমিল্লার দেবিদ্বারের গ্রামের বাড়ির পারিবারিক করবস্থানে তাকে দাফন করা হবে।

ঘটনার একদিন পর হাসপাতাল থেকে গুরুতর আহত অবস্থায় সাদিয়া ভিডিও বার্তায় বলেছিলেন, আসাদ আমাকে কয়েকবার বলেছে যে, পেট্রল ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করবে। গত ৫ মাস ধরে যৌতুকের জন্য আমাকে শারীরিক নির্যাতন করে আসছে। আমার স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির সবাই শুধু বলত, বাপের বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে আয়। টাকা না দেওয়ায় আমার শরীরে কেরোসিন দিয়ে আগুন লাগিয়ে দেয় আমার স্বামী। আমি আগুন নেভানোর চেষ্টা করলেও আমাকে বাধা দেওয়া হয়।

প্রসঙ্গত, গত শনিবার (২৩ এপ্রিল) সকালে উপজেলা সদরের বানিয়াপাড়ার ভাড়া বাসায় সাদিয়ার গায়ে আগুন দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তার স্বামী আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে। ঘটনার দুই দিন পর সাদিয়ার বাবা মো. ফরিদুল আলম অপুল সরকার বাদী হয়ে মামলা করেন করেন। বুধবার রাতে আসাদ সরকারকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।