সন্তান জন্ম দিয়ে এইচএসসি পরীক্ষাকেন্দ্রে ঝুমুর

গর্ভে সন্তান নিয়ে এইচ এসসি পরীক্ষা দিচ্ছিলেন ঝুমুর দেবনাথ (২১)। ভোরের দিকে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে সন্তান জন্ম দিয়ে সকালেই এইচএসসি পরীক্ষা দিলেন ঝুমুর দেবনাথ। মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) বাঞ্ছারাপুর সোবহানিয়া ইসরামিয়া ফাজিল ডিগ্রি মাদরাসা কেন্দ্রে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে বাংলা দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষা দিয়েছেন তিনি। ঝুমুর দেবনাথ বাঞ্ছারামপুর উপজেলার খোসকান্দি গ্রামের হরিপদ দেবনাথের মেয়ে। তিনি এবার বাঞ্ছারামপুর সরকারি কলেজের মানবিক বিভাগ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন।

কুমিল্লার হোমনা চৌরাস্তা সংলগ্ন ডক্টরস হসপিটালের বেডে শুয়ে মঙ্গলবার বিকেলে ঝুমুর জানান, সোমবার দিবাগত গভীর রাতে প্রসবব্যথা উঠলে তাকে হোমনা ডক্টরস হসপিটালে ভর্তি করা হয়। অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চিকিৎসকরা সিজারিয়ান অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেন। এরপর শেষরাতের দিকে সিজারিয়ানের মাধ্যমে একটি ফুটফুটে কন্যা সন্তানের জন্ম হয়।

জ্ঞান ফিরলে ঝুমুর সিজারিয়ান অপারেশনের দায়িত্বে থাকা ডা. মো. মাহবুবুর রহমানকে জানান, তিনি এবারের এইসএসসি পরীক্ষার্থী। আগের দিন বাংলা প্রথম পত্র পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন এবং সকাল হলেই বাংলা দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষা। এ পরীক্ষায় অংশ নিতে চান। পরে চিকিৎসক ভালোভাবে দেখে বলেন, ‘আপনি সকালে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন।’এরপর ঝুমুর হাসপাতাল থেকে একজন নার্সকে সাথে নিয়ে কেন্দ্রে গিয়ে পরীক্ষায় অংশ নেন। শেষরাতে সিজারিয়ান অপারেশনে সন্তান জন্ম দেয়ার পর সকালে কেন্দ্রে গিয়ে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পেরে ঝুমুর দেবনাথ অনেক খুশি হয়েছেন বলে জানান।

সিজারিয়ান অপারেশনের দায়িত্বে থাকা ডা. মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, আমরা প্রসূতির স্বাস্থ্যের অবস্থার ওপর নির্ভর করে তাকে পরীক্ষার অনুমতি দেই। সবচেয়ে বড় কথা হলো, প্রসূতি নিজেই পরীক্ষা দেওয়ার জন্য মানসিকভাবে তৈরি ছিলেন। পরীক্ষা শেষে বর্তমানে হাসপাতালে এসে চিকিৎসা নিচ্ছেন তিনি।পরীক্ষাকেন্দ্রের সচিব নিরাঞ্জন দেবনাথ বলেন, আমরা প্রসূতিকে পরীক্ষা দেয়ার জন্য আলাদা একটি রুমের ব্যবস্থা করি। সেখানে একজন শিক্ষকসহ চিকিৎসক সার্বক্ষণিক তাকে দেখাশোনা করেছেন।