মাকে ঘর থেকে বের করে তালা ঝুলিয়ে দিলেন ছেলে

ভোলায় মাকে ঘর থেকে বের করে দিয়ে দরজায় ডাবল তালা ঝুলিয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে ছেলের বিরুদ্ধে।রোববার (১৩ জুন) সকালে ভোলা সদর উপজেলার ভেলুমিয়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের কুঞ্জপট্টি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। বিকেল পর্যন্ত ঘরের তালাবদ্ধ দরজার সামনে বসে জয়তুল বিবি (৪৫) নামের ওই নারীকে কাঁদতে দেখা গেছে।

জয়তুল বিবি জানান, প্রায় ২০ বছর আগে তার স্বামী শাহে আলম অন্যত্র বিয়ে করার পর থেকে তার পরিবারের কোনো খোঁজ-খবর নেননি। পরে সন্তানদের নিয়ে নিয়ে তিনি অনেক বিপাকে পড়েন। এরপর ঢাকা ও চট্টগ্রাম গিয়ে বিভিন্ন কাজ করে সংসার চালান। এছাড়া কিছু টাকা সঞ্চয় করে গ্রামের বাড়ি কুঞ্জপট্টি এলাকায় প্রায় ১৫ গণ্ডা জমি ক্রয় করেন। ছেলেরা বড় হয়ে আয় রোজগার করতে শুরু করলে তিনি গ্রামের বাড়ি চলে আসেন।

তিনি আরও জানান, বেশ কয়েক বছর আগে তার বড় ছেলে বিল্লাল হোসেন ও ছোট ছেলে হেলার বিয়ে করেন। বড় ছেলে স্ত্রী সন্তান নিয়ে ঢাকা থেকে ছোটখাটো ব্যবসা করে সংসার চালান। বড় ছেলে তার খাওয়ার খরচের টাকা দেন। ছোট ছেলে স্ত্রী সন্তান নিয়ে গ্রামেই আলাদা হয়ে থাকেন। কখন তাকে খাওয়ার খরচের টাকা দিতেন না। উল্টো তার ক্রয়কৃত জমি লিখে দেয়ার জন্য চাপ দিতে থাকেন ছেলে হেলাল ও তার স্ত্রী রিনা আক্তার তুলি।

অভিযোগ করে জয়তুল বিবি জানান, রোববার সকালে হেলাল ও তা স্ত্রী আবারও তাকে জমি লিখে দিতে চাপ দেন। এতে তিনি রাজি না হওয়ায় ছেলে ও বউ তার ঘর থেকে বের করে তালাবদ্ধ করে দেন। এখন তিনি ঘরে ঢুকতে পারছেন না। এলাকাবাসীও হেলাল ও তার স্ত্রীর ভয়ে কেউ তাকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসছেন না।এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত ছেলে মো. হেলাল অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, তিনি অনেক কষ্ট করে ৪০ শতাংশ জমি ক্রয় করেছেন। সে জমিতে ঘর করে তার মাকে থাকতে দিয়েছেন। কিন্তু তার বড় ভাই বিল্লাল হোসেন ও মামা মো. আফসার পাটওয়ারি তার জমি ভোগ দখল করার জন্য মাকে দিয়ে এসব ষড়যন্ত্র করছেন।

তিনি আরও জানান, সকাল ৮টার দিকে তিনি বাড়ি থেকে ভোলার শহরের কাজে চলে যান। পরে সাড়ে ১০টার দিকে তিনি শুনেছেন তার স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া করে তার মা ঘর থেকে বের হয়ে গেছেন। আর তালাবদ্ধ ঘরটিতে তার মা থাকেন না। তিনি তার বড় ভাইর ঘরে থাকেন।ভেলুমিয়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মোশারফ হোসেন বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছি। অভিযুক্ত হেলালকে পাওয়া যায়নি। বিষয়টি তদন্ত চলছে।’