মৃ’ত্যুর আগে যে শেষ ইচ্ছার কথা জানালেন এটিএম শামসুজ্জামান

গ্রামের মোড়লের চরিত্রে অনবদ্য অভিনয়ের মাধ্যমে অসংখ্য দর্শকের মন কেড়েছেন এটিএম শামসুজ্জামান। দীর্ঘ অভিনয় জীবনে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন বাংলা চলচ্চিত্রের এই জীবন্ত কিংবদন্তি।দর্শকদের প্রশংসার পাশাপাশি পেয়েছেন অসংখ্য পুরস্কার। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, আজীবন সম্মাননা ও একুশে পদকসহ অসংখ্য সম্মানে ভূষিত হয়েছেন এই অভিনেতা। প্রাপ্তির খাতায় অপূর্ণতা বলতে কিছু নেই। তারপরও জীবনের শেষ ইচ্ছে এখনো পূরণ হয়নি এই

বরেণ্য অভিনেতার।এটিএম শামসুজ্জামান খল চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে তৈরি করেছেন নতুন একটি ধারা। বড় পর্দার পাশাপাশি ছোট পর্দাতেও সফল তিনি। অসুস্থতার কারণে দীর্ঘদিন অভিনয় থেকে দূরে থাকলেও এটিএম শামসুজ্জামান আজও দর্শকের কাছে প্রত্যাশিত এক নাম। সম্প্রতি প্রবীণ এই অভিনেতা রাইজিংবিডির এই প্রতিবেদককে জানান তার শেষ ইচ্ছার কথা।এটিএম শামসুজ্জামান বলেন, ‘অনেক সিনেমার গল্প লিখেছি। নাটক-সিনেমায় অনেক অভিনয় করেছি। দর্শক আমাকে অভিনেতা হিসেবেই ভালোবাসেন।

একটি মাত্র সিনেমা পরিচালনা করেছি। এর পরে আর কোনো সিনেমা পরিচালনা করা হয়নি। আমি এমন একটি সিনেমা বানাতে চাই, যা দর্শককে উদ্দীপ্ত করবে। শেখ মুজিবকে চিত্রনাট্যে তুলে ধরার পরিকল্পনা আছে। আমার এই স্বপ্নটা এখনো আছে। জীবনের শেষ মুহূর্তে একটাই চাওয়া—শেখ মুজিবকে নিয়ে সিনেমা বানাতে চাই। যে সিনেমায় আমাদের মুক্তিযু’দ্ধের ইতিহাস থাকবে, বাংলার সংস্কৃতি সমানভাবে উঠে আসবে। মৃ’ত্যুর আগে যদি এই সুযোগ পাই, সেটা হবে অনেক আনন্দের।’

এটিএম শামসুজ্জামান ১৯৪১ সালের ১০ সেপ্টেম্বর নোয়াখালীর দৌলতপুরে জন্মগ্রহণ করেন। অভিনয় দিয়ে বাংলা সিনেমা ও নাটকে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন তিনি। এটিএম শামসুজ্জামান একাধারে কাহিনিকার, সংলাপ রচয়িতা, চিত্রনাট্যকার, চলচ্চিত্র পরিচালক এবং অভিনেতা। ১৯৬১ সালে পরিচালক উদয়ন চৌধুরীর ‘বি’ষকন্যা’ চলচ্চিত্রে সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ শুরু করেন তিনি।

প্রথম কাহিনি ও চিত্রনাট্য লিখেন ‘জলছবি’ চলচ্চিত্রের জন্য। এ পর্যন্ত শতাধিক চিত্রনাট্য ও কাহিনি লিখেছেন। প্রথম দিকে কৌতুক অভিনেতা হিসেবে চলচ্চিত্র জীবন শুরু করেন। অভিনেতা হিসেবে চলচ্চিত্র পর্দায় তার আগমন ১৯৬৫ সালে। ১৯৭৬ সালে চলচ্চিত্রকার আমজাদ

হোসেনের ‘নয়নমণি’ চলচ্চিত্রে খলনায়কের চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে আলোচনায় আসেন তিনি। পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। শিল্পকলায় অবদানের জন্য ২০১৫ সালে পেয়েছেন রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ সম্মাননা একুশে পদক।