বিসিএসে উত্তীর্ণের পর স্ত্রীকে তালাকের চেষ্টা, কারাগারে স্বামী

নারী ও শিশু নির্যাতন মামলায় দুজনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে ঢাকার লালবাগ পুলিশ। শুক্রবার (২০ মে) শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মামুনুর রশিদ তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।আসামিরা হলেন কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার আগানগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবিরের ছেলে লিখন

শাকসেনা (২৭) ও হৃদয় শাকসেনা। এদের মধ্যে লিখন শাকসেনা ৪০তম বিসিএসে শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত।এর আগে বৃহস্পতিবার (২৯ মে) রাতে ভৈরবের ছাগাইয়া গ্রাম থেকে লিখন শাকসেনা ও সকালে ঢাকার লালবাগ এলাকা থেকে হৃদয় শাকসেনাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের ৪ জুন লিখন

শাকসেনার সঙ্গে ঢাকার ৩৩ নম্বর লোলিত মোহন দাস লেন এলাকার আমির হোসেনের মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌসীর বিয়ে হয়। তারা দুজনই জগনাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। সেখানে পড়াশোনার সময় তারা প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। পরে পারিবারিকভাবে বিয়ে করে।বিয়ের পর স্বামী লিখন শাকসেনা ৪০তম বিসিএসে উত্তীর্ণ হয়ে শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়। এরপর স্ত্রীর কাছে ১০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। দিতে অস্বীকার করলে নির্যাতন শুরু করেন। ঘটনা শুনে শ্বশুর আমির হোসেন তাকে দুই লাখ টাকা যৌতুক দেন। এতেও খুশি না হয়ে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন অব্যাহত রাখেন লিখন।

গত ২৯ এপ্রিল দুপুরে স্বামী লিখন তার শ্বশুরের বাসায় গিয়ে ফের যৌতুকের টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে অস্বীকার করলে স্ত্রীকে মারধর করেন। এ সময় শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেন। পরে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করা হয়। মীমাংসার চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস গত ১৪ মে লালবাগ থানায় স্বামীসহ চারজনকে আসামি করে একটি মামলা করেন (নম্বর ৬)।আসামিরা হলেন স্বামী লিখন শাকসেনা, শ্বশুর ইউপি চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির, শাশুড়ি শিউলী শ্রাবণী ও দেবর হৃদয় শাকসেনা। মামলার পর বৃহস্পতিবার সকালে লালবাগ থেকে হৃদয় শাকসেনাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। একইদিন রাতে ভৈরবের ছাগাইয়া গ্রাম থেকে লিখন শাকসেনাকে গ্রেফতার করা হয়।

মামলার বাদী জান্নাতুল ফেরদৌসী মোবাইলে জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা দুজনই জগনাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তাম। পরে ভালোবেসে তাকে বিয়ে করি। প্রথমে আমাদের সংসার ভালোই চলছিল। এক পর্যায়ে সে ১০ লাখ টাকা যৌতুক দাবিতে আমার ওপর নির্যাতন শুরু করে। দুই লাখ টাকা দেওয়ার পরও অত্যাচার-নির্যাতন কমেনি। বিশেষ করে বিসিএসে উত্তীর্ণ হওয়ার পর আমাকে তালাক দিয়ে অন্যত্র বিয়ে করতে পাগল হয়ে যায়। কয়েকদিন আগে আমাকে নির্যাতন করে আহত করে। এরপর আমি মামলা করতে বাধ্য হই।’এ বিষয়ে ঢাকার লালবাগ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ মোরশেদ বলেন, গ্রেফতার দুজনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মামলাটি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।