পাপুল-সেলিনা দম্পতির বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

মানবপাচারের অভিযোগে কুয়েতে গ্রেপ্তার সাংসদ কাজী শহিদ ইসলাম পাপুল এবং তার স্ত্রী সংসদ সদস্য সেলিনা ইসলামসহ চারজনের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ বুধবার সকালে মামলাটি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন, দুদকের পরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য।

দুদকের উপপরিচালক মো. সালাহউদ্দিন মামলাটি করেন। মামলায় পাপুলের শ্যালিকা জেসমিন প্রধানকে এক নম্বর আসামি করা হয়েছে। এছাড়া অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারে সহযোগিতা করায় পাপুল-সেলিনার মেয়ে ওয়াফা ইসলামকেও আসামি করা হয়েছে।মামলায় অভিযোগ করা হয়, সাংসদ পাপুল দম্পতি দুই কোটি ৩১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৮ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। এছাড়া ‘কাগুজে প্রতিষ্ঠানের’ আড়ালে জেসমিন প্রধান পাঁচ ব্যাংকের মাধ্যমে ২০১২ সাল থেকে ২০২০ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ১৪৮ কোটি টাকা হস্তান্তর, রূপান্তর ও স্থানান্তরের মাধ্যমে মানিলন্ডারিং করেছেন।

পাপুলের বিরুদ্ধে কুয়েতে যে মামলা হয়েছে, তাতে বলা হয়েছে; বাংলাদেশি সাংসদসহ তিনজন একটি চক্র। তারা কুয়েতে অন্তত ২০ হাজার বাংলাদেশিকে পাঠিয়ে প্রায় ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকা আয় করেছে।কুয়েতের সিআইডির বরাত দিয়ে দেশটির বিভিন্ন গণমাধ্যম আরও জানায়, পাপুলের মালিকানাধীন মারাফি কুয়েতিয়া গ্রুপে প্রায় ১৫ থেকে ২০ হাজার প্রবাসী বাংলাদেশি কাজ করে।

এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে কুয়েতের আরবি দৈনিক আল কাবাস ও আরব টাইমস বাংলাদেশের এক সাংসদসহ তিন মানব পাচারকারীর বিরুদ্ধে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এরপরই লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সাংসদ সহিদ ইসলাম পাপুল ও তার স্ত্রী সেলিনা ইসলামের দুর্নীতির বিষয়টি সামনে আসে। ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে সাংসদ পাপুলের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে দুদক। পরে কুয়েতের সিআইডি তাকে গ্রেপ্তার করে। তার বিরুদ্ধে মানবপাচার, অর্থপাচার ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের শোষণের অভিযোগ এনেছে কুয়েতি প্রসিকিউশন।

সাধারণ শ্রমিক হিসাবে কুয়েত গিয়ে বিশাল সাম্রাজ্য গড়া পাপুল ২০১৮ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন লক্ষ্মীপুরের আসনটিতে। ওই নির্বাচনে ওই আসনটি আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দিয়েছিল। কিন্তু জাতীয় পার্টির প্রার্থী শেষ মুহূর্তে ভোট থেকে সরে দাঁড়ালে ‘বিএনপি ঠেকাতে’ স্থানীয় আওয়ামী লীগ পাপুলের পক্ষে কাজ করে বলে দলটির নেতাদের ভাষ্য।