তাহসানের উপর রাগ নেই, বিয়ে করায় রাগ যত আমার উপর: মিথিলা

‘তাহসান আমার প্রাক্তন স্বামী। আমরা আজও বন্ধু। আমাদের রোজ কথা হয়। মানুষকে বুঝতে হবে আমরা দুজনে এক বাচ্চার বাবা-মা। আমাদের সম্পর্কটা এখন বন্ধুর মতো। আর এই সম্পর্ক আয়রার জন্য খুব জরুরি। আমার আর তাহসানের স্বাভাবিকতার জন্যই আয়রা আমায় আজ বলতে পারে, ‘মা আমি বাবার কাছে যাব’। আমার অন্যান্য বন্ধুদের তো দেখেছি বিবাহ বিচ্ছেদের পরে পারস্পরিক সম্পর্ককে তাঁরা এত তিক্ত করেছে যে তার প্রভাব বাচ্চার ওপর এসে পড়েছে। আয়রা সেখানে স্বাভাবিক পরিবেশে বড় হচ্ছে। তবে এখন আয়রার স্কুল আর নতুন বই নিয়ে চিন্তায় আছি।

কলকাতার সংসারটাও গোছাতে হবে।’ সম্প্রতি বাংলাদেশে থেকে পশ্চিমবঙ্গের দৈনিক আনন্দবাজারকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কথাগুলো বলছিলেন অভিনেত্রী ও সমাজকর্মী রাফিয়া রশিদ মিথিলা।বিচ্ছেদের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কটাক্ষের শিকার হচ্ছেন মিথিলা। বিষয়টি সামনে এনে মিথিলা বলেন, ‘আমাকে, সৃজিতকে নিয়ে বা আমার বিয়ে নিয়ে আজ নয়, ভারত আর বাংলাদেশ দুদিকেই নেটমাধ্যমে অজস্র কটাক্ষের শিকার হচ্ছি। তবে সাম্প্রতিক কালে অরুচিকর কথা বেড়েছে। আমাকে ‘অসভ্য’ বলে মানুষ নিজে যে অসভ্যতার পরিচয় দিচ্ছে,

সেটা আগামী পৃথিবীর জন্য একেবারেই স্বাস্থ্যকর নয়।’ মিথিলা আরও বলেন, , ‘বাংলাদেশে তো মানুষের সবচেয়ে বেশি রাগ আমার ওপর। মানুষ প্রশ্ন করছেন মেয়ে হয়ে কেন আমি বিবাহ বিচ্ছেদ করলাম? মেয়েদের নাকি এসব করতে নেই। তাহসানের ওপর কিন্তু মানুষের রাগ নেই। রাগ যত আমার ওপর। আমি কেন বিয়ে করলাম?’

সৃজিতকে বিয়ে করেও বিশাল অন্যায় করেছেন বলে ধারণা অনেকের। তাই এ বিষয় নিয়েও কটাক্ষের শিকার হচ্ছেন মিথিলা। মিথিলা বলেন, ‘সৃজিত তো ইসলাম ধর্মীও নয়। ওকে বিয়ে করে আমি বাংলাদেশের সংস্কৃতিকে কলুষিত করেছি। আমি নাকি ‘চরিত্রহীন মা’। এই ‘অসভ্য’ মা ‘অসভ্য’ জাতির জন্ম দেবে। এবার কিন্তু সময় এসেছে আমরা সবাই একসাথে মিলে, অনলাইন তথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই হয়রানি বন্ধ করার উদ্যোগ নিই। হয়রানির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হোক সমস্বরে।’

প্রায় ৩ মাস হয়ে গেল বাংলাদেশে আটকে আছেন, সৃজিতের জন্য মন খারাপ করছে না? এমন প্রশ্নে আনন্দবাজারকে মিথিলা জানান, হিসেব মতো বিয়ের পরে আমি আর সৃজিত ৭ থেকে ৮ মাস একসঙ্গে থেকেছি।এরকম হয়েছে, আমি আর আয়রা হয়তো কলকাতায় তখন সৃজিতকে শ্যুটিং-এ যেতে হয়েছে। আবার আমি কাজে ঢাকায় চলে এসছি। আমরা দুজনেই এত ব্যাস্ত!

তারপরে এই অতিমারি। কিছু ভাবতেই দিচ্ছে না। এই তো এ বছর এপ্রিল থেকে আমরা ঢাকায়। কিন্তু এ বার কলকাতায় আয়রার স্কুল খুলে যাচ্ছে।অনলাইনে ক্লাস সম্ভব হলেও ওর নতুন বইপত্র সব কলকাতায় পড়ে আছে। কী যে করব! বর্ডার বন্ধ। আমি আর সৃজিত রোজই আমাদের যাওয়া নিয়ে আলোচনা করি।ও যে ঢাকায় আসবে, তাও তো হবে না। ঢাকায় এখন করোনা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসছে। আমি বর্ডার খুললে জুলাইতে যাওয়ার চেষ্টা করব। তখন শুনছি সৃজিত শ্যুটে মুম্বইতে থাকবে। যা অবস্থা, অনেক দূরের কথাও আগে থেকে ভাবছি।’