‘ছেলেকে ফিরে পাব না, বিচারটা চাই’

নিখোঁজ হওয়ার তিন দিন পর নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় উদ্ধার করা হয় বুয়েটের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশের মরদেহ। তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে চিকিৎসক। আর ছেলের এই নির্মম হত্যার বিচারের দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী ফারদিন নূর ওরফে পরশের বাবা নূরউদ্দিন রানা। আজ মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) দুপুরে বুয়েট ক্যাম্পাসে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ দাবি জানান।

এসময় কথা বলতে গিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন ফারদিনের বাবা কাজী নূরউদ্দিন রানা। অশ্রুভেজা কণ্ঠে তিনি বলেন,’গত শুক্রবার দুপুরে সে বাড়ি থেকে খাওয়া-দাওয়া করে বের হয়েছে। সে তার মাকে বলেছে, কাল পরীক্ষা আছে, আমি আজ গ্রুপ স্টাডি করব। আজ বাসায় আসব না। কাল শনিবার দুপুরে পরীক্ষা দিয়ে বাসায় এসে ভাত খাব।”ওর মা জানালা দিয়ে তাকিয়ে ছিল, আমার ছেলে যায়। কিন্তু সে ছেলে আর আসলো না। আমি সবার দোয়া চাই এবং আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই। আমি চাই আর কোনো মায়ের বুক যেন খালি না হয়’, বলেন তিনি।

তিনি আরো জানান,’আমার ছেলে লেখাপড়ার পাশাপাশি গবেষণা, সোশ্যাল ওয়ার্ক এবং ডিবেটিং করতো। ডিসেম্বরে স্পেনের মাদ্রিদে আয়োজিত একটি ডিবেটিং অনুষ্ঠানে বুয়েটের প্রতিনিধি হয়ে তার অংশ নেওয়ার কথা ছিল।”সেখানে যাবে বলে সে পাসপোর্টও রেডি করে ফেলেছে। কিন্তু এর আগেই দুর্বৃত্তরা আমার সন্তানকে পরপারে পাঠিয়ে দিয়েছে’, এ কথা বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন নূরউদ্দিন।ফারদিনের বাবা বলেন,’আমি জানি, সন্তানকে ফিরে পাব না। কিন্তু আমি এই ঘটনার বিচার চাই।’

তিনি আরো বলেন,’এটি কারা করেছে সেটি আমরা ধারণা করতে পারছি না। আমার কোনো শত্রু আছে বলে মনে করি না। আমি কারও কোনো ক্ষতি করিনি। আমি সাংবাদিকতা করেছি কিন্তু এমন কোনো রিপোর্ট করিনি যার কারণে কেউ আহত হতে পারে।’শোকাহত এই পিতা বলেন,’দেশ অনেক ডিজিটাল হয়েছে। কী রকম ডিজিটাল হয়েছে আমি সেটা দেখতে চাই। ট্রাকিং সিস্টেমটা ডেভেলপ করতে হবে। সেটা করতে পারলে তার সঙ্গে কার কমিউনিকেশন ছিল বিস্তারিত সব বের হয়ে আসবে। আমি কারও দিকে ইঙ্গিত করতে চাচ্ছি না।’