চা বিক্রি করে বোনেদের পড়ার খরচ জোগাচ্ছে ১৪ বছরের কিশোর

করোনা সংক্রমণ বদলে দিয়েছে বিশ্বের আচার-আচরণকে। এই সংক্রমণের ফলে বহু মানুষ নিজেদের আত্মীয়-স্বজনকে হারিয়ে একাকীত্ব জীবন যাপন করছেন, আবার অনেকের ক্ষেত্রে তার থেকেও বেশি কষ্ট ও বেদনাদায়ক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে কর্মহীন হয়ে। আর এই কর্মহীনের মূলে রয়েছে লকডাউন।

করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে দেশজুড়ে যখন লকডাউন জারি হয় ঠিক সে সময় এক মা কর্মহীন হয়ে পড়েন। তবে ওই মা যখন কাজ হারিয়ে নিজের ছেলেমেয়েদের মুখে অন্ন তুলে দিতে ব্যর্থ ঠিক সে সময় তারই পাশে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে অন্ন সংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন তার খুদে সন্তান। এই খুদে সন্তান এখন নেটদুনিয়ায় সুপার হিরো।

মায়ের কষ্ট লাঘব করতে ১৪ বছরের সুভানই ঠিক করে সে নিজেই অর্থ উপার্জন করবে। আর এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভেন্ডিবাজার এলাকার একটি চায়ের দোকানে চা তৈরি করায় এবং সেই চা সে ঘুরে ঘুরে বিক্রি করতে শুরু করে। আর এই ভাবে তার প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা উপার্জন হয় বলে সে জানিয়েছে। উপার্জনের টাকা থেকে নিজের জন্য কিছু রেখে বা সম্পূর্ণটাই তুলে দেয় মায়ের হাতে। আর সেই টাকা দিয়েই

চলছে সুভানের পরিবারের সংসার। আর এই টাকাতেই চলছে বোনেদের অনলাইন ক্লাস। আর তাকে এই উপার্জনের জন্য আপাতত জলাঞ্জলি দিতে হয়েছে নিজের পড়াশোনা। তবে সে জানিয়েছে মা আবার কাজে ফিরলে এবং পুনরায় স্কুল শুরু হলে পড়াশোনা করতে শুরু করবে।

সুভান নামের এই ১৪ বছর বয়সি কিশোর বর্তমানে মুম্বইয়ের ভেন্ডি বাজার এলাকার বাসিন্দা। বাড়িতে মা ও ছোট ছোট বোনেদের সাথে তার বাস। বাবা এক যুগ ১২ বছর আগে মারা গেছেন। মায়ের উপার্জন বলতে একটি স্কুলের স্কুল বাসের পড়ুয়াদের দেখাশোনা করা। কিন্তু বর্তমানে স্কুল বন্ধ থাকায় তার মা কর্মহীন। দেশে লকডাউন জারি হওয়ার পর কর্মহীন হয়ে পড়লে সুভানের মা যেটুকু সঞ্চয় ছিল সেই অর্থ দিয়ে কিছুদিন সংসার চালান। কিন্তু সেই সঞ্চয়ের টাকা কিছুদিনের মধ্যেই শেষ হয়ে গেলেই সুভানকে উপার্জনের পথ বেছে নিতে হয়।