আ’লীগ বিনাভোটেই নির্বাচিত হতে চায়: বিএনপি প্রার্থী

ঢাকা-১৮ আসনের উপনির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন বলেছেন, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে এখানে ভোটের পরিবেশ নেই। আমরা শুনেছি, আওয়ামী লীগ বিভিন্ন থানা থেকে লোক এনে ভোট কেন্দ্র দখলের চেষ্টা করতেছে। তারপরও জনগণ আমাদের সাথে থাকায় আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। আশা করি সফল হব। বুধবার (১১ নভেম্বর) নিজ নির্বাচনী কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। জাহাঙ্গীর বলেন, গত ২৪ অক্টোবর থেকে প্রশাসনের অনুমতি নিয়েও কর্মসূচি করতে পারিনি, প্রতিটি গণসংযোগে আওয়ামী লীগ বাধার সৃষ্টি করেছে।

তিনি জানান, গত ৭ নভেম্বর গভীর রাতে ৪৭ নম্বর ওয়ার্ডে একটি ব্যানার নির্ভর ঘরে আওয়ামী লীগ নিজেরা আগুন দিয়ে ঢাকা-১৮ আসনের বিএনপির ২৩৫ জন নেতাকর্মীর নামে মামলা দেয়া হয়েছে। পুলিশ আমাদের নেতাকর্মীদের ঘরে ঘরে গিয়ে হুমকি দিচ্ছে। এমনও বলা হচ্ছে, ১২ তারিখের আগে যদি কাউকে এলাকায় দেখা যায় তাদের মেরে ফেলা হবে। মহিলাকর্মীরাও নিস্তার পাচ্ছে না। এভাবেই চলছে।

আওয়ামী লীগের নানা সন্ত্রাসী ঘটনার চিত্র তুলে ধরে ধানের শীষের প্রার্থী বলেন, আমরা যখন পুলিশকে বলি এসব ঘটনায় মামলা কেন নিচ্ছেন না ? জবাবে তারা বলে উপরে যোগাযোগ করেন। নির্বাচনের সময় উপর বলতে যা বুঝি-নির্বাচন কমিশন। আমরা তাদের সাথেও দুইবার মিটিং করেছি কোনো সহযোগিতা পাইনি। নির্বাচন কমিশন ও পুলিশ প্রশাসন সবাই পক্ষপাতিত্বমূলক আচরণ করছে। এ কারণে ভোটারাও সঙ্কিত। তারপরও আমরা জানি, ভোটাররা দীর্ঘদিন ভোট দিতে পারছে না। আশা করছি, ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে যাবে। ক্ষমতাসীনদের সন্ত্রাস, দুর্নীতি দুঃশাসনের বিরুদ্ধে তারা ভোট দেবে। আমাদের পোলিং এজেন্টরাও প্রতিটি বুথে থাকবে। নেতাকর্মীরাও কেন্দ্রের আশাপাশে থাকবে। আমরা সেভাবে প্রস্তুতি নিয়েছি। জনগণের ভোটে ধানের শীষের বিজয় হবে। এখান থেকেই জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগ ও গণতন্ত্রেও উত্থান হবে।

বিদ্যমান বাস্তবতায় ঢাকা-১৮ আসনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় উল্লেখ করে জাহাঙ্গীর বলেন, জনগণ যেহেতু আমাদের সাথে আছে তাই চেষ্টা করে যাচ্ছি। আশা করি, আমরা সফল হবোএক প্রশ্নে জবাবে তিনি বলেন, ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে যেতে চায়। কিন্তু তাদের যেতে দেয়া হয় না। সরকার ও সিইসি যে ঘটনা ঘটায় যে আগে সন্ত্রাস করে, বাড়ি বাড়ি গিয়ে ডিস্টার্ব করে। একজন সাধারণ মানুষ ভোট দিয়ে বাসায় ফিরে আসতে চায়। যখন দেখে সন্ত্রাস-পুলিশী হয়রানি তখন ভোট দিতে যেতে তারা ভয় পায়। আমরা জনগণের কাছে গিয়ে বলার চেষ্টা করেছি, যতই বাধা আসুক আপনারা ভোট কেন্দ্রে যাবেন। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে ১৩৬ কেন্দ্রে কোন ভোট পড়েনি। সেখানে কী আওয়ামী লীগ-বিএনপি নেই? তার মানে আওয়ামী লীগ বিনাভোটেই নির্বাচিত হতে চায়। তারা ঢাকা-১৮ আসনেও সেই চেষ্টা করছে।

দেশের শতকরা ৮০ ভাগ মানুষ খালেদা জিয়া, তারেক রহমান ও বিএনপিকে সমর্থণ করে উল্লেখ করে ধানের শীষের এই প্রার্থী বলেন, কিন্তু যখন একটি রাষ্ট্র যখন ভোটাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে সেখানে আমরা নিরুপায় হয়ে যাই। তারপরও জনগণকে সাথে নিয়ে এসব সন্ত্রাস প্রতিহত করার চেষ্টা করবো। ভোটাদের যদি ভোট কেন্দ্রে যেতে দেয়া না হয়, আমাদেও পোলিং এজেন্টদের যদি বের করে দেয়া হয় তাহলে জনগণ যে সিদ্ধান্ত নিবে সেই অনুযায়ি কাজ করবো।সংবাদ সম্মেলনে জাহাঙ্গীরের সাথে ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা

ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়ক আমান উল্লাহ আমান, সমন্বয়ক আব্দুস সালাম, হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্মমহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, জলবায়ু বিষয়ক সহ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, সাংগঠনিক সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুল, সাবেক সংসদ সদস্য এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন, উত্তরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বজলুল বাছিত আনজু, এজিএম শামসুল ইসলাম, বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং সদস্য শামসুদ্দিন দিদার প্রমুখ।