নাম হিরা হলেও তার সব কাজ বিকৃত রুচির। গত পাঁচ বছরে বিভিন্ন কৌশলে ১১ জন কিশোরীকে ধর্ষণ করেছে এ যুবক। এমনকি সেসব দৃশ্য ধারণ করতো মোবাইলে। একই পরিবারের তিন বোন এবং আরেকটি পরিবারের দুই বোনকেও বিভিন্নভাবে কব্জা করে হিরা।
হিরা সিকদারের ফাঁদে পড়া এসব মেয়ের বয়স ১২ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে। শারীরিক সম্পর্কের সময় এসব মেয়ের অগোচরে হিরা তা মোবাইলে ভিডিও ধারণ করতেন পরবর্তীতে সেই ভিডিও দেখিয়ে তা ছড়িয়ে দেয়ার ভয়ভীতি দেখিয়ে তাদের ফের ধর্ষণ করতেন।
এদের মধ্যে দুই মেয়ের বিয়ের পর তাদের শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে ওই ভিডিও দেখায় হিরা সিকদার। ফলে তাদের তালাক দেয়া হয়। এছাড়া তার ধর্ষণের শিকার হয়েছে একই পরিবারের তিন বোন এবং আরেক পরিবারের দুই বোন। কিন্তু ভিডিওর জন্য তারা কারো কাছে কোনো অভিযোগ করতে পারেননি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হিরার ঘনিষ্ঠ এক স্বজন জানান, হিরা বিবাহিত। সে তার স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকায় থাকতো। ওই সময় তার স্ত্রীর অনুপস্থিতিতে হিরা এক ছেলেকে বলাৎকার করে। এ ঘটনা এলাকাবাসী দেখে ফেললে হিরার মাথার চুল থেকে শুরু করে ভ্রু পর্যন্ত কেটে দেয়। পরে তাকে এলাকা থেকে তাড়িয়ে দেয়। এ ঘটনার পর হিরাকে তালাক দেয় স্ত্রী। এরপর থেকে হিরা গ্রামের বাড়িতে থাকা শুরু করে।
অভিযুক্ত হিরা সিকদার বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার ফরিদপুর ইউপির পশ্চিম ফরিদপুর গ্রামের আব্দুল খালেক সিকদারের ছেলে। ২৮ অক্টোবর রাতে হিরাসহ দুজনের বিরুদ্ধে বাকেরগঞ্জ থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগী এক কিশোরীর বাবা। আর ১১ জনের পক্ষে থানায় আরেকটি ধর্ষণ মামলা করেন আরেক অভিভাবক।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী ছাত্রীর পরিবার অর্থনৈতিকভাবে অসচ্ছল। তাই নওরোজের দূরসম্পর্কের এক ভাতিজি (মামলার আসামি) ওই ছাত্রীকে নওরোজের কাছে বিনা বেতনে পড়ার প্রস্তাব দেন। ২০১৮ সালের ২৫ অক্টোবর সকালে নওরোজ হিরার ভাতিজি ওই ছাত্রীকে নওরোজের বাড়িতে নিয়ে যান। নওরোজ ভাতিজিকে বাইরে অপেক্ষা করতে বলে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করে। এ সময় মুঠোফোনে ভিডিও ও স্থিরচিত্র ধারণ করেন। পরে তা প্রকাশের ভয় দেখিয়ে পরে আবার শারীরিক সম্পর্ক করতে বাধ্য করা হয়।
মামলার পর থেকেই পলাতক ছিলেন হিরা সিকদার। পুলিশের গ্রেফতার থেকে রক্ষা পেতে অনেকটা গোপনে বৃহস্পতিবার দুপুরে বরিশাল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নওরোজ হিরা হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করেন। তবে বিচারক এসএম মাহফুজ আলম তাদের জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।