মেয়র তাপসকে ইশরাক সাহস থাকলে ‘ভাতিজা কোটা’ ছাড়া মাঠে নামুন

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেন। তিনি বলেন, সাহস থাকলে প্রধানমন্ত্রীর ‘ভাতিজা কোটা’ ছাড়া মাঠে নামুন। পুলিশ ছাড়া মাঠে নামুন, দেখবো কেমন বেটা আপনি।বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর গোপীবাগে এক প্রস্তুতি সভায় এসব কথা বলেন তিনি। যাত্রাবাড়ী ও নয়াবাজারে বিএনপির সমাবেশ সফল করতে এ সভা হয়।

এসময় মেয়রকে উদ্দেশ্য করে ইশরাক হোসেন বলেন, ডেঙ্গুতে শত শত মানুষ মারা যায়। অথচ তিনি পরিবার নিয়ে বিদেশে প্রমোদ ভ্রমণে ব্যস্ত থাকেন। কিছুদিন আগে তিনি বললেন, আবার নামতে ইচ্ছা হয়, আপনি না কি বিচারপতিদের টেনেহিঁচড়ে নামিয়েছেন। সাহস থাকলে প্রধানমন্ত্রীর ‘ভাতিজা কোটা’ ছাড়া মাঠে নামুন। আমরা দেখিয়ে দিতে চাই আমাদের কি কি করতে মনে চায়। পুলিশ ছাড়া মাঠে নামুন, দেখবো কেমন বেটা আপনি। আসলে এরা (আওয়ামী লীগ) দুর্বৃত্ত। এদের কোনো রাজনৈতিক শিষ্টাচার নেই। তারা এখন ব্যস্ত লুণ্ঠিত অর্থ নিরাপদ রাখার জন্য।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়রের সমালোচনা করে ইশরাক আরও বলেন, ‘ভাতিজা কোটায়’ অবৈধভাবে মেয়র হয়েছেন। বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) হত্যাযজ্ঞসহ অনেক অভিযোগ আপনার বিরুদ্ধে। আপনি নিজেকে গেরিলা বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান দাবি করেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিবাহিনীর বাইরে আলাদাভাবে গঠন করা হলো মুজিব বাহিনী। এই মুজিব বাহিনী পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রের গোয়েন্দা প্রধানের নেতৃত্বে হয়েছিল। উদ্দেশ্য দেশ স্বাধীন হলে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের হটিয়ে নিজেদের কৃতিত্ব নেওয়া। আমার বাবা বলেছেন, এই মুজিব বাহিনীই গাজীপুর ক্যাম্পে তাকে হত্যা করতে চেয়েছিল।

বিএনপির এ নেতা আরও বলেন, আমরা কোনো নোংরামি বা রেষারেষিতে যেতে চাই না। আমাদের এই শিক্ষা দেওয়া হয়নি। দেশনেত্রীর রাজনৈতিক শিষ্টাচার আগামী দিনে ইতিহাস হয়ে থাকবে। কিন্তু আওয়ামী লীগ দেশকে যেদিকে নিয়ে যাচ্ছে আজ ওদের ভাষায় কথা বলা ছাড়া পথ নেই।

তিনি বলেন, ১৫ বছর ধরে মানুষ অন্যায়-অবিচার সহ্য করে আসছে। আজ দেশের মানুষ যখন তারেক রহমানের নেতৃত্বে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে, আন্দোলন সফলতার দিকে এগুচ্ছে। এমন সময়ে আদালতের মাধ্যমে বলা হলো, তার বক্তব্য প্রচার করা হবে না। দেশে কিসের আইন চলছে? যেদিন খালেদা জিয়াকে সাজা দেওয়া হলো সেদিনই কোর্টকে তছনছ করা উচিত ছিল। যেদিন এক কাপড়ে দেশনেত্রীকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করা হলো তখন আমরা পরাধীনতাকে মেনে নিয়েছি। সেদিন আমরা প্রতিরোধ গড়ে তুলতে ব্যর্থ হয়েছি।

ইশরাক হোসেন আরও বলেন, আজকে যে আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি দাবি করে, অথচ তারা যুদ্ধের সময় দেশেই ছিল না। ফুর্তিতে ব্যস্ত ছিল। পরবর্তীতে তারাই কৃতিত্ব নেওয়ার চেষ্টা করে। আমি রণাঙ্গনের সম্মুখ গেরিলা বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে বলতে চাই, আওয়ামী লীগ হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী শক্তি। আর মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি বিএনপি। জিয়ার ঘোষণার মাধ্যমে দেশে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়েছিল। জিয়াউর রহমানই আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিক নিবন্ধন দিয়ে শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করেছিলেন।

তিনি বলেন, আমাদের প্রায় ৫০ লাখ নেতাকর্মীকে জেলে নিয়েছে। আজকে আমার এ বক্তব্যের জন্য আমাকেও জেলে যেতে হতে পারে। আর কত জেলে নেবেন। এরপর তো আপনাদের বাসায় রাখতে হবে। খালেদা জিয়া বন্দী, আন্দোলন থেমে নেই। আমি জেল-গুলি এসব ভয় পাই না। অনেক ভাই শহীদ হয়েছেন। আমিও দেশনেত্রীর মুক্তি, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে শহীদ হতে প্রস্তুত।