হাত-পা ধরেও মিললো না অক্সিজেন, হারাতে হলো মাকে

করোনাভাইরাস প্রতিদিনই কেড়ে নিচ্ছে হাজারো প্রাণ। প্রত্যেকটি মৃত্যুর গল্পই করুণ। তবে মাঝেমধ্যে এর ভয়াবহতা যেন সবকিছুকেই ছাপিয়ে যায়। আর এমনই একটি ভয়াবহ মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে অক্সিজেনের অভাবে মৃত্যুপুরী হয়ে ওঠা ভারতে।হাত-পা ধরে সন্তানের শত অনুনয়ের পরও অক্সিজেন যোগাড় করতে না পেরে মাকে হারানোর ঘটনা ঘটেছে দেশটির রাজধানী দিল্লিতে। করোনাভাইরাস আক্রান্ত মাকে বাঁচাতে শ্রুতি সাহা নামে এক তরুণীর এমনই আকুতি নাড়া দিয়েছে ভারতজুড়ে।

এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে শ্রুতি সাহা জানান, গত রাত ২টায় বাসা থেকে বের হয়েছি। পুরো শহর ঘুরে কোথাও অক্সিজেন পাইনি। এখানে ভোর চারটায় পৌঁছে লাইনে দাঁড়িয়েছি । ৫-৬ ঘণ্টা পর যখন সামনে আসলাম তখন বলা হচ্ছে ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন আনতে। কোথায় পাবো? দুই দিন ঘুরে কোনো হাসপাতালে বেডই পাইনি। কিন্তু এরপর খুব বেশি অপেক্ষা করতে হয়নি শ্রুতিকে, কেননা এরইমধ্যে মাকে র=হারানোর খবর পেয়েছেন ফোনে।

শুধু শ্রুতিই নয়, চোখের সামনেই প্রিয়জনের মৃত্যু দেখতে হচ্ছে আরও অনেক অসহায় স্বজনকেই। মনিকা গোয়াল নামে একজন জানান, ভোরে আমার মা মারা গেছেন। একটু অক্সিজেন পর্যন্ত দিতে পারিনি। আমার স্বামীর অবস্থাও বেশ খারাপ। কারও কোনো সহায়তা পাচ্ছি না।এদিকে, তিন সপ্তাহ সংক্রমণ ও মৃত্যু হার পাল্লা দিয়ে বেড়ে চললেও, তেমন কোনও উন্নতি এখনও দেখা যাচ্ছে না দিল্লির চিকিৎসা ব্যবস্থায়।

ভারতের চিকিৎসক ডা. ডি. এস. রানা জানান, গত সপ্তাহের চেয়ে এখন অক্সিজেন সরবরাহ কিছুটা বেড়েছে। কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় তা কিছুই না। খাবার এবং পানি বন্ধ করলে যে অবস্থা তৈরি হবে এখন একই অবস্থা চলছে হাসপাতাল গুলোতে।প্রসঙ্গত, অক্সিজেন ও ভেন্টিলেশনের অভাবে প্রতি চার মিনিটে একজন করে করোনাভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তি মারা যাচ্ছেন দিল্লিতে।