মেডিকেলে চান্স পেয়েও ভর্তি হতে পারছে না বাশার!

সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়ে টাকার অভাবে ভর্তি অনিশ্চিত হয়ে পরেছে ডোমারের অস্বচ্ছল পরিবারের ছেলে আবুল বাশারের। ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস কোর্সের প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় মেধাক্রমে ১ হাজার ৫১১তম হয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন তিনি। রংপুর মেডিকেল কলেজ কেন্দ্র থেকে পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ১০০ নম্বরের মধ্যে পেয়েছেন ৮৫ নম্বর। মেধার জোরে সব বাধা জয় করে মেডিকেলে পড়ার সুযোগ পেলেও আর্থিক দুশ্চিন্তায় গোটা পরিবার।

আবুল বাশার ডোমার উপজেলার বামুনিয়া ইউনিয়নের মো. মাহাবুল ইসলামের ছেলে। তিন ভাইবোনের মধ্যে আবুল বাশার সবার বড়। আবুল বাশারের বাবা একজন বর্গাচাষী। অন্যের জমি চাষাবাদের পাশাপাশি বাইরে গিয়েও কাজ করে সন্তানের লেখাপড়ার ও পরিবারের জীবিকা নির্বাহ করেন। তবে, গত দেড় বছর করোনা কারণে বাইরে গিয়ে কাজ করতে না পারায় অর্থকষ্টে দিন কাটছে মাহাবুল ইসলামের। ছেলে মেডিকেলে পড়ার সুযোগ পেয়েছে এই খুশির সংবাদ পেলেও তার মুখে হাসির বদলে চোখে বইছে হতাশার অশ্রু।

মাহাবুল ইসলাম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমার সামান্য কিছু জমির ও এলাকার মানুষের জমি বর্গা নিয়ে চাষাবাদের পাশাপাশি ঢাকায় গিয়ে কাজ করে সন্তানদের লেখাপাড়ার খরচ চালাই। তবে করোনার সময়ে বাইরে যেতে না পারায় এবং অর্থকষ্ট থাকায় সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ চালিয়ে যাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পরেছে।

তিনি আরও বলেন, ছেলেটাকে ঠিকভাবে লেখাপড়ার খরচ দিতে পারিনি। এসএসসি তে সে তার ফুফুর বাসায় চিলাহাটিতে থেকে লেখাপড়া করে চিলাহাটি মার্চেন্ট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে কৃতকার্য হয়। এর পর সে রংপুর সরকারি কলেজে ভর্তির সুযোগ পেলে আত্মীয়-স্বজন ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সহযোগিতায় রংপুরে সে লেখাপড়া চালিয়ে যায়। এইচএসসিতে সে জিপিএ-৫ পেয়েছিল। নিজের ইচ্ছাশক্তি, আগ্রহ ও কঠোর পরিশ্রম করে লেখাপড়া চালিয়ে গেছে সে। মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেলেও ভর্তির জন্য অনেক টাকা দরকার।

এতটাকা কিভাবে জোগাড় করবো তা ভেবে কুলকিনারা খুঁজে পাচ্ছিনা। এ বিষয়ে আর্থিক সহযোগিতার জন্য ডোমার উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে আবেদন জানিয়েছি। ইউএনও শাহিনা শবনম আশ্বস্ত করেছেন সহযোগিতা করবেন। আবুল বাশার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, সবার সহযোগীতায় মেডিকেলে পড়ার সুযোগ পেয়ে ডাক্তার হতে পারলে অসহায় পরিবারের ছেলে-মেয়ে লেখাপড়ার দায়িত্ব নিয়ে তাদের পাশে থাকবো।