কুমিল্লায় পেটে গজ রেখে সিলাই, ৫ মাস পর মৃত্যু

কুমিল্লায় সিজারিয়ান অপারেশনের সময় পেটে গজ রেখে দেয়ার ৫ মাস পর ফের অপারেশন করে গজ বের করা সেই শারমিন আক্তার (২৫) মারা গেছেন। মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে ঢাকার একটি প্রাইভেট হাসপাতালে লাইফসাপোর্টে থাকা অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। নিহত শারমিন আক্তার (২৫) কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার মোগসাইর গ্রামের মেয়ে। আজ বুধবার (১৪ এপ্রিল) ভোরে শারমিনের মরদেহ ঢাকা থেকে তার বাবার বাড়ি জেলার দেবিদ্বারের হোসেনপুর গ্রামে আনা হয়।

সেখানে সকাল ১০টায় প্রথম জানাজা শেষে নেয়া হয় তার স্বামীর বাড়ি জেলার মুরাদনগর উপজেলার মোগসাইর গ্রামে। সেখানে বাদ জোহর দ্বিতীয় জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হবে। পরিবার সূত্র জানা গেছে, ২০২০ সালের ৫ নভেম্বর রাতে মুরাদনগরের মোগসাইর গ্রামের রাসেল মিয়ার স্ত্রী শারমিন আক্তারকে দেবিদ্বারের আল ইসলাম হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি করা হয়।

কর্তব্যরত চিকিৎসক রোজিনা আক্তার তাকে দেখে জরুরি সিজার করতে পরামর্শ দেন। চিকিৎসকের পরামর্শে সিজারে সম্মতি দিলে একই দিন ডাক্তার রোজিনা আক্তার এবং ডা. শামীমা আক্তার লিন্টা তার সিজার করেন। তখন সিজারে ছেলে সন্তানের জন্ম হয় শারমিনের। পরে ৯ নভেম্বর সকালে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেয়া হয়। অপারেশনের কিছুদিন পর থেকে তার পেটে ব্যথা ও ক্ষত থেকে পুঁজ বের হতে থাকে।

মঙ্গলবার (৬ এপ্রিল) শারমিনকে কুমিল্লার ময়নামতি ক্যান্টনমেন্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় সেখানে ডা. কর্নেল আবু দাউদ মো. শরীফুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল চিকিৎসক তার পেটে অপারেশন করে পেট থেকে গজ বের করেন। পরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়। তখন অবস্থার অবনতি হলে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।

নিহত ওই প্রসূতির বাবা মোবারক হোসেন জানান, মঙ্গলবার রাতে ধানমন্ডির বাংলাদেশ মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে মেয়ে মারা গেছে। গত ২ দিন শারমিন লাইফ সাপোর্টে ছিল। তার ৫ মাসের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। কুমিল্লার সিভিল সার্জন ডা. মীর মোবারক হোসাইন বলেন, ওই প্রসূতির মৃত্যুর সংবাদ আমরা জানতে পেরেছি। এ ঘটনায় ইতোমধ্যে পৃথক ২টি তদন্ত কমিটি আগেই গঠন করা হয়েছে। তদন্তের প্রতিবেদন পাওয়া গেলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।